প্রথম অধ্যায়
পবিত্র কুরআনে বাণীবাহক দল
সকল যুগে ও সকল দেশেই যারা ইললামের বাণী প্রচার করবেন তাদেরকে অবশ্যই মানব সমাজের নিকট দাওয়াত পেশ করার পদ্ধতি জেনে নিতে এবং এ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ পেতে হবে। কুরআন এক সময় সৃষ্টি করেছিল একদল লোক। তাঁরা ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) –এর সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)। শুধু ইসলামের ইতিহাসে নয়, গোটা মানবজাতির ইতিহাসে এ স্মরণীয় ব্যক্তিদের কোন তুলনা নেই। ইসলামের সে স্বর্ণযুগের পর তাঁদের মত সর্বগুণান্বিত মানুষের কোন দলই দুনিয়াতে জন্মগ্রহণ করেননি। অবশ্য একথা সত্য যে, বিভিন্ন যুগে পৃথিবীর নানা স্থানে ঐ ধরনের দু’চাজন মনীষী জন্মেছেন কিন্তু কখনো স্বর্ণযুগের মত উল্লেখিত উচ্চমানের গুণ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কোন সুসংগঠিত দল ইতিহাসের কোন যুগেই দেখা যায়নি।
এ এক অনস্বীকার্য ঐতিহাসিক সত্য। তাই বিষয়টি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা আমাদের এর রহস্য উদঘাটন করতে হবে।
সাহাবায়ে কেরাম (রা)—এর সমতুল্য লোক দেখা যায় না কেন?
পবিত্র কুরআনের বাণী আজও আমাদের নিকট অবিকৃত অবস্থায় মওজুদ রয়েছে। তাছাড়া রাসূলে করীম (সাঃ)—এর হাদীস, বস্তব কর্মজীবন সম্পর্কে তাঁর নির্দেশাবলী এবং তাঁর জীবনবৃত্তান্ত সবকিছুই আমাদের নিকট সংরক্ষিত আছে। সোনালী যুগের মুসলিম উম্মাতের সামনে কুরআনের বাণী ও রাসূল (সা)—এর শিক্ষা যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবে আমাদের নিকটও আছে। শুধু রাসূলুল্লাহ (সা)—এর দৈহিক সত্তা আমাদের মধ্যে উপস্থিত নেই। এ কারণেই কি দুনিয়ার কোন দেশেই ইসলামী সমাজ পূর্ণংগরূপে কায়েম নেই?
আল্লাহর বিধানের বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারণের জন্যে রাসূলুল্লাহ (সা)—এর দৈহিক উপস্থিতি অপরিহার্য হলে আল্লাহ তাআলা কখনো ইসলামী জীবন ব্যবস্থাকে দুনিয়ার সকল মানুষের জন্যে একমাত্র দ্বীন হিসাবে অবতীর্ণ করতেন না এবং এটাকে দুনিয়াবাসীদের জন্যে সর্বশেষ প্রত্যাদিষ্ট বাণী এবং সকল কাল ও যুগোপযোগী দ্বীন বলেও ঘোষণা করতেন না।
আল্লাহ তাআলা স্বয়ং পবিত্র কুরআন হেফাযদ করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। কারণ, তিনি জানতেন, রাসূলুল্লাহ (সা)—এর ইন্তেকালের পরও ইসলামী জীবন বিধান বাস্তবায়িত হয়ে মানব জাতির কল্যাণ সাধন করতে পারবে। আল্লাহ তাআলা এ জন্যেই ২৩ বছরের নবুয়াতী জীবনের পর তাঁর প্রিয় রাসূল (সা)-কে নিজের দরবারে ডেকে নেন এবং ঘোষণা করেন যে, ইসলাম পৃথিবীর অস্তিত্বের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। রাসূলুল্লাহ (সা) –এর দৈহিক অনুপস্থিতি ইসলামী বিধান বাস্তবায়নের পথে কোন বাধা নয়।
প্রথম কারণ: এর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে গিয়ে প্রথমেই দেখা যাবে স্বর্ণ যুগের মুসলমানগণ যে স্বচ্ছ ঝর্ণাধারা থেকে তাদের পিপাসা মিটিয়ে ছিলেন, সে পানির সাথে অন্যান্য পদার্থ মিশে গেছে। সে যুগের মুসলমানরা কি প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন, তাও আমাদের খুঁজে দেখতে হবে। হয়তে বা প্রশিক্ষণ পদ্ধতিও ভেজাল মিশ্রিত হয়ে গেছে।
যে প্রস্রবণ থেকে সাহাবায়ে কেরাম আকণ্ঠ আব-ই হায়াত পান করেছিলেন তাহচ্ছে পবিত্র কুরআন। আবার বলছি, তা শুধুমাত্র কুরআন। কারণ, হাদীস ও রাসূল (সা)—এর দকেয়া নির্দশাবলী ঐ প্রসবণেরই স্রোতধারা মাত্র। উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রা)—কে রাসূল (সা)—এর চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেনঃ “পবিত্র কুরআনই তাঁর চরিত্র।”
পবিত্র কুরআন থেকেই সাহাবায়ে কেরাম(রা) তাঁদের পিপাসা দূর করেছিলেন এবং একমাত্র কুরআনের ছাঁচেই তাঁরা তাদের জীবন গড়ে তুলেছিলেন। কুরআন যে তাঁদের একমাত্র পথপ্রদর্শক ছিলো, তা এ জন্যে নয় যে, সে যুগে কোন সভ্যতা, কৃষ্টি, বিজ্ঞান, সাহিত্য বা বিদ্যালয় ছিল না। প্রকৃতপক্ষে তৎকালীন রোমীয় সভ্যতা, কৃষ্টি ও সাহিত্য এবং রোমীয় আইনশাস্ত্র আজ পর্যন্ত ইউরোপীয় সভ্যতার ভিত্তি হিসাবে পরিগণিত। সে যুগে গ্রীক সভ্যতারও প্রভাব ছিল। গ্রীক তর্কশাস্ত্র, গ্রীক দর্শন, কলা, বিজ্ঞান আজও পাশ্চাত্য চিন্তাধারার উৎস হিসেবে বিবেচিত। পারস্যের সভ্যতা—কলা, বিজ্ঞান, কাব্য, উপকথা, ধর্ম ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী ছিল। নিকট ও দূরবর্তী অন্যান্য এলাকায় অপরাপর সত্যতাও বিরাজমান ছিল। উদাহারণ স্বরূপ ভারতীয় ও চীন সভ্যতার নাম উল্লেখ্য। আরব ভূখণ্ডের উত্তর ও দক্ষিণে রোমীয় ও পারস্য সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত ছিল। আর ইয়াহুদী ও খৃস্টানরা আরব উপদ্বীপের মধ্যস্থলে বসবাস করছিল। তাই সে যুগের মুসলমানগণ সভ্যতা ও কৃষ্টির অভাবজনিত অজ্ঞতার দরুন আল্লাহর কিতাবকে জীবনের একমাত্র পথপ্রদর্শক হিসেবে মেনে নেননি, বরং গভীর চিন্তা-ভাবনার পরই তাঁরা এ সিদ্ধান্তে পৌছেছিলেন। দৃষ্টান্ত স্বরুপ তাওরাত কিতাব থেকে কিছু অংশ নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা) এর দরবারে হযরত ওমর (রা)-এর উপস্থিতির বিষয় উএল্লখ করা এযেত পারে। রাসুলুল্লাহ (সা) অসন্তুষ্ট হয়ে হযরত ওমর (রা)-কে বলেন, ‘‘আল্লাহর কসম! আজ হযরত মুসা (আ) যদি জীবত থাকেতন, তবে তার জন্যও আমার আনুগত্য বাধ্যতামূলক হতো।’’
এ ঘটনা থেকে পরিস্কার বুঝা যায় যে, রাসুলুল্লাহ (সা) তাঁর প্রাথিমক অনুসারীদের জন্য প্রিশক্ষন দানের প্রারম্ভিক স্তরে শুধু আল্লার বানী থেকেই জ্ঞান আহরণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। আর সে বাণীর সমষ্টিই হচ্ছে আল কুরআন। তিনি ঠিক করে ছিলেন যে, তাঁর সহচরগণ শুধু আল্লার কিতাবের জন্যই নিজেদের জীবন উৎস্বর্গ করে দেবেন। এবং একমাত্র এ কিতাবের শিক্ষা মুতাবিকই তাঁদের জীবন গড়ে তুলবেন। এ জন্যই হযরত ওমর (রা)-কে অন্য গ্রন্থের প্রতি মেনোযোগী হতে দেখামাত্রই আল্লার রাসুল (সা) অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন।
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর রাসুল এমন একদল লোক তৈরী করতে চেয়েছিলেন যাদের মন-মগয ও জ্ঞান-বুদ্ধি হবে সম্পর্ণরূপে কলুষতা ও সকল প্রকার পংকিলতা মুক্ত। পবিত্র কুরআন বিদানদাতা স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই তাঁদের প্রশিক্ষণদানের উপায় শিখিয়ে দেন।
উল্লেখিত ব্যক্তিগণ কুরআনের প্রশান্তি নির্ঝর থেকে আকণ্ঠ পান করেন এবং অতুলনীয় গুণাবলীর অধিকারী হিসেবে স্থান লাভ করলেন। পরবর্তী কালে অপরাপর উৎস থেকে কিছু ভেজাল পদার্থ এসে কুরআনের পবিত্র স্রোতধারায় মিশ্রিত হয়। পরবর্তী বংশধরগণ যেসব উৎস থেকে উপকরণ সংগ্রহ করেন, সেগুলো হচ্ছে গ্রীক দর্শন ও তর্কশাস্ত্র, প্রাচীন পারসী উপকথা ও ভাবধারা,ইয়াহুদীদের পুঁথিপুস্তক ও রীতিনীতি, খৃস্টানদের পুরোহিততন্ত্র এবং এগুলোর সাথে সাথে অন্যান্য ধর্ম ও সভ্যতার কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত অংশ। কুরআনের তাফসীরকারকগণ এ বিষয়গুলোকে তাদের পাণ্ডিত্যপূর্ণ আলোচনার ভিতর শামিল করে নেন এবং এরই ফলে পবিত্র কুরআনের দেয়া মূলসূত্রের সাথে এগুলো জড়িয়ে যায়। পরবর্তী বংশধরগণ এ ভেজাল মিশ্রিত উৎস থেকেই জ্ঞান আহরণ করেন। ফলে তাঁরা কখনো প্রথম দফায় গঠিত দলের মত গুণ ও চরিত্রের অধিকারী হতে পারেনি।
আমরা বিনা দ্বিধায় বলতে পারি যে, স্বর্ণযুগের মুসলমানদের সাথে পরবর্তীকালের মুসলমানদের যে পার্থক্য সৃষ্টি হয় তার কারণ হচ্ছে এই যে, খাঁটি ইসলামী আদর্শের সাথে অন্যান্য আদর্শের সংমিশ্রণের ফলে যে মতবাদ রচিত হয়, তা ইসলামী বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলে।
দ্বিতীয় কারণ: এ ব্যাপারে অন্য একটি কারণও উল্লেখ্য। স্বর্ণযুগের মুসলমানদের শিক্ষা গ্রহণের পদ্ধতিটিও ছিল চমৎকার। তাঁরা সংস্কৃতি, তথ্য অথবা জ্ঞান পিপাসা পরিতৃপ্তির উদ্দেশ্যে কুরআন অধ্যয়ন করেননি। সে যুগের কোন লোকই তাঁর বিদ্যার ভাণ্ডার ফাঁপিয়ে তোলা, কোন বৈজ্ঞানিক বা আইন বিষয়ক সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা অথবা বুদ্ধিবৃত্তির কোন অভাব পূরণের জন্য কুরআন অধ্যয়ন করেননি। বরং তাঁরা নিজেদের ও সমগ্র দলটির জন্যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাআলা কি কি বিধি-নিষেধ নাযিল করেছেন তা-ই অবগত হবার জন্য পবিত্র কুরআনের দিকে মনোযোগী হয়েছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে সংগ্রামে লিপ্ত সৈনিক যেভাবে প্রতিদিনের সামরিক নির্দেশাবলী প্রতিপালনে তৎপর থাকে, ঠিক সেভাবেই সে যুগের মু’মিনগণ কুরআনের নির্দেশ পালন করছিলেন। তাঁরা এক সাথে কুরআনের বেশী অংশ অধ্যয়ন করেননি। কেননা, অধিক পরিমাণ বিধি-নিষেধের বোঝা বহন করা যে কঠিন তা তাঁরা ভালভাবেই উপলব্ধি করতেন। খুব বেশী হলে তাঁদের এক একজন একসাথে দশটি আয়াত পড়তেন, মুখস্ত করতেন এবং আয়াতের মর্মানুসারে চলতেন। আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা) বর্ণিত একটি হাদীস থেকেই আমরা এসব বিষয় জানতে পারি।
“বিধি-নিষেধ মেনে চলাই আহকাম নাযিল করার উদ্দেশ্য।” এ উপলব্ধি সে যুগের লোকদের জন্য আধ্যাত্মিক উন্নয়ন ও জ্ঞান সম্প্রসারণের দ্বার খুলে দিয়েছিলেন, তাঁরা যদি নিছক আলোচনা, বিদ্যার্জন ও তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কুরআন অধ্যয়ন করতেন, তাহলে তাঁদের জন্যে এ দ্বার কখনো উন্মুক্ত হতো না। তাছাড়া এ উপলব্ধির কারণেই তাঁদের জন্যে কুরআনের বিধি-নিষেধ মেনে চলা সহজ এবং দায়িত্বের বোঝা হালকা হয়ে যায়। তাঁদের উঠা-বসা ও চাল-চলনের ভিতরে কুরআনকে এমনভাবে প্রকাশ করেন যে, তাঁদের প্রত্যেকেই ঈমানের জ্বলন্ত চিত্র হিসেবে প্রতিভাত হয়ে উঠেন। এ ঈমান কোন বই বা মগযে লুকায়িত ছিল না, বরং মানব জীবন ব্যাপক পরিবর্তনের কর্মসূচী নিয়ে অগ্রসরমান একটি বৈপ্লবিক আন্দেলনের মধ্য দিয়েই তা মূর্তিমান হয়ে উঠেছিল।
বস্তুত যারা কুরআনের বিধি-নিষেধ জেনে সে অনুসারে জীবন যাপনের ইচ্ছা রাখে না, তাদের জন্যে কুরআন কখনো তার জ্ঞানভাণ্ডার খুলে দেয় না। কুরআন নিছক জ্ঞানগর্ভ আলোচনা, সাহিত্য চর্চা, গল্প-সংকলন অথবা ইতিহাস গ্রন্থ নয়। অথচ এসব বিষয়ই এতে আলোচিত হয়েছে। কুরআন একটি জীবন বিধান নিয়ে এসেছে। এ জীবন বিধানের মূলকথা হচ্ছে, আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ। তাই মহান আল্লাহ তাআলা সমগ্র কুরআন একসাথে নাযিল করেননি। বরং কিছু সময় পর পর অল্প অল্প করে নাযিল করেছেন:———————————————–
আমরা অল্প অল্পকরে কুরআন নাযিল করেছি। যেন তুমি (হে নবী) তা কিছু সময় পরপর মানুষের নিকট আবৃত্তি করতে পার এবং এভাবেই আমরা ধীরে ধীরে ওহী নাযিল করেছি।— বনী ইসরাঈল: ১০৬
সমগ্র কুরআন একসাথে নাযিল হয়নি, বরং ধীরে ধীরে বিস্তার লাভকারী ইসলামী সমাজের নতুন নতুন সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনে, মানুষের মনোভাব ও চিন্তাধারার গতি প্রবাহের ধারা অনুসারে সমাজ জীবনের ক্রমোন্নতির সাথে সঙ্গতি রাখার উদ্দেশ্যে এবং মুসলিম সমাজ বাস্তব জীবনে যেসব প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিল সেগুলোর জবাব দানের জন্যেই পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন অংশ নাযিল হয়েছিল। বিশেষ অবস্থা ও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একক বা একাধিক আয়াত নাযিল হয়। জনগণের মনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যেসব প্রশ্নের উদয় হয়েছিল, ঐ আয়াত বা আয়াতগুলো সেগুলোর জবাব দান করে একটি বিশিষ্ট ঘটনার রূপ তুলে ধরে এবং ঐ বিশেষ অবস্থায় যা যা করণীয় তা বলে দেয়। মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি ও কার্যকলাপের যেসব ভ্রান্তি ছিল, এ আয়াতসমূহ তা অপনোদন করে মানুষকে আল্লাহর নিকটে পৌছে দেয় এবং আল্লাহ তাআলার গুণাবলী ও সৃষ্টিতত্ত্বের ব্যাখ্যা দান করে। তাই তাঁরা স্পষ্টই বুঝতে পেরেছিলেন যে, তাঁদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের অধীনে এবং তাঁরা আল্লাহ তাআলার রহমাতের ছত্রছায়ায় জীবনের দিনগুলো অতিবাহিত করছেন। আল্লাহ তাআলার সাথে জীবনের এ গভীর সম্পর্ক উপলব্ধির দরুনই তারা আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান অনুসারে তাঁদের জীবন গড়ে তুলতে সতত সচেষ্ট ছিলেন।
এভাবে স্বর্ণযুগের মুসলিমগণ জীবন সম্পর্কিত সকল নির্দশাবলীকে বাস্তব জীবনে রূপায়িত করতে অভ্যস্ত হয়েছিলেন। পরবর্তী যুগের মুসলমানগণ জীবন বিধানকে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা ও উপভোগের বিষয়বস্তুতে পরিণত করে। আর নিসন্দেহে বলা যেতে পারে যে, পরবর্তী যুগের মুসলমানদের মধ্যে যে পরিবর্তন দেখা যায়, এটি তার অন্যতম কারণ।