68- بَابُ الْوَرَعِ وَتَرْكِ الشُّبُهَاتِ
পরিচ্ছেদ – ৬৮: হারাম বস্তুর ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন এবং সন্দিহান বস্তু পরিহার করার গুরুত্ব
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَتَحۡسَبُونَهُۥ هَيِّنٗا وَهُوَ عِندَ ٱللَّهِ عَظِيمٞ ﴾ [النور: ١٥]
অর্থাৎ “তোমরা একে তুচ্ছ গণ্য করেছিলে; যদিও আল্লাহর দৃষ্টিতে এ ছিল গুরুতর বিষয়।” (সূরা নূর ১৫ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ إِنَّ رَبَّكَ لَبِٱلۡمِرۡصَادِ ١٤ ﴾ [الفجر: ١٤]
অর্থাৎ “নিশ্চয় তোমার রব্ব সতর্ক দৃষ্টি রাখেন।” (সূরা ফাজ্র ১৪)
1/593 وَعَنِ النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، يَقُولُ: «إنَّ الحَلاَلَ بَيِّنٌ، وَإنَّ الحَرامَ بَيِّنٌ، وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبَهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهُنَّ كَثيرٌ مِنَ النَّاسِ، فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ، اسْتَبْرَأَ لِدِينهِ وَعِرْضِهِ، وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ في الحَرَامِ، كَالرَّاعِي يَرْعَى حَوْلَ الحِمَى يُوشِكُ أنْ يَرْتَعَ فِيهِ، ألاَ وَإنَّ لكُلّ مَلِكٍ حِمَىً، ألاَ وَإنَّ حِمَى اللهِ مَحَارِمُهُ، ألاَ وَإنَّ فِي الجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَت صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ، وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ، ألاَ وَهِيَ القَلْبُ » متفقٌ عَلَيْهِ
১/৫৯৩। নু‘মান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘অবশ্যই হালাল বিবৃত ও স্পষ্ট এবং হারাম বিবৃত ও স্পষ্ট, আর উভয়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দিহান বস্তু; যা অনেক লোকেই জানে না। অতএব যে ব্যক্তি এই সন্দিহান বস্তুসমূহ হতে দূরে থাকবে, সে তার দ্বীন ও ইজ্জতকে বাঁচিয়ে নেবে এবং যে ব্যক্তি সন্দিহানে পতিত হবে (সন্দিগ্ধ বস্তু ভক্ষণ করবে), সে হারামে পতিত হবে। (এর উদাহরণ সেই) রাখালের মত, যে নিষিদ্ধ চারণভূমির আশেপাশে পশু চরায়, তার পক্ষে নিষিদ্ধ সীমানায় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শোন! প্রত্যেক বাদশাহরই সংরক্ষিত চারণভূমি থাকে। আর শোন! আল্লাহর সংরক্ষিত চারণভূমি হল তাঁর হারামকৃত বস্তুসমূহ। শোন! দেহের মধ্যে একটি মাংসপিন্ড রয়েছে; যখন তা সুস্থ থাকে, তখন গোটা দেহটাই সুস্থ হয়ে থাকে। আর যখন তা খারাপ হয়ে যায়, তখন গোটা দেহটাই খারাপ হয়ে যায়। শোন! তা হল হৃৎপিন্ড (অন্তর)।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
2/594 وعن أنسٍ رضي الله عنه: أنَّ النبيَّ (صلى الله عليه و سلم) وَجَدَ تَمْرَةً فِي الطَّرِيقِ، فَقَالَ: «لَوْلاَ أنِّي أخَافُ أنْ تَكُونَ مِنَ الصَّدَقَة لأَكَلْتُهَا ». متفقٌ عَلَيْهِ
২/৫৯৪। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পথে একটি খেজুর পেলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘যদি আমার এর সাদকাহ হওয়ার আশঙ্কা না হত, তাহলে আমি এটি খেয়ে ফেলতাম।’’ (বুখারী ও মুসলিম)[2]
3/595 وَعَنِ النَّوَّاسِ بنِ سَمْعَانَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «البِرُّ: حُسْنُ الخُلُقِ، وَالإِثْمُ: مَا حَاكَ فِي نَفْسِكَ، وَكَرِهْتَ أنْ يَطَّلِعَ عَلَيْهِ النَّاسُ ». رواه مسلم
৩/৫৯৫। নাওয়াস ইবনে সাম‘আন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘পুণ্যবত্তা হল সচ্চরিত্রতার নাম এবং পাপ হল তাই, যা তোমার অন্তরে সন্দেহ সৃষ্টি করে এবং তা লোকে জেনে ফেলুক—এ কথা তুমি অপছন্দ কর।’’ (মুসলিম) [3]
4/596 وَعَن وَابِصَةَ بنِ مَعبَدٍ رضي الله عنه، قَالَ: أتَيْتُ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، فَقَالَ:« جئتَ تَسْألُ عَنِ البِرِّ ؟ » قُلْتُ: نَعَمْ، فَقَالَ: «اسْتَفْتِ قَلْبَكَ، البرُّ: مَا اطْمَأنَّت إِلَيْهِ النَّفسُ، وَاطْمأنَّ إِلَيْهِ القَلْبُ، وَالإثْمُ: مَا حَاكَ في النَّفْسِ، وَتَرَدَّدَ فِي الصَّدْرِ، وَإنْ أفْتَاكَ النَّاسُ وَأفْتَوكَ » حديث حسن، رواه أحمد والدَّارمِيُّ في مُسْنَدَيْهِمَا
৪/৫৯৬। ওয়াবেসাহ ইবনে মা‘বাদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘তুমি পুণ্যের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে এসেছ?’’ আমি বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি তোমার অন্তরকে (ফতোয়া) জিজ্ঞাসা কর। পুণ্য হল তা, যার প্রতি তোমার মন প্রশান্ত হয় এবং অন্তর পরিতৃপ্ত হয়। আর পাপ হল তা, যা মনে খটকা সৃষ্টি করে এবং অন্তর সন্দিহান হয় ; যদিও লোকেরা তোমাকে (তার বৈধ হওয়ার) ফতোয়া দিয়ে থাকে।’’ (আহমাদ, দারেমী) [4]
[1] সহীহুল বুখারী ৫২, ২০৫১, মুসলিম ১৫৯৯, তিরমিযী ১২০৫, নাসায়ী ৪৪৫৩, ৫৭১০, আবূ দাউদ ৩৩২৯, ইবনু মাজাহ ৩৯৮৪, আহমাদ ১৭৮৮৩, ১৭৯০৩, ২৭৬৩৮, ১৭৯৪৫, দারেমী ২৫৩১
[2] সহীহুল বুখারী ২০৫৫, ২৪৩১, ২৪৩৩, মুসলিম ১০৭১, আবূ দাউদ ১৬৫১, ১৬৫২, আহমাদ ২৭৪১৮, ১১৭৮০, ১১৯৩৪, ১২৫০২, ১২৫৯৩, ১৩১২১
[3] মুসলিম ২৫৫৩, তিরমিযী ২৩৮৯, আহমাদ ১৭১৭৯, দারেমী ২৭৮৯
[4] আহমাদ ১৭৫৩৮, ১৭৫৪০, ১৭৫৪৫, দারেমী ২৫৩৩