বিষয়ভিত্তিক আয়াত ও হাদিস
সহীহ নিয়ত
· আল-কুরআন
وَ مَاۤ اُمِرُوْۤا اِلَّا لِیَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِیْنَ لَهُ الدِّیْنَ ۬ۙ حُنَفَآءَ وَ یُقِیْمُوا الصَّلٰوۃَ وَ یُؤْتُوا الزَّکٰوۃَ وَ ذٰلِکَ دِیْنُ الْقَیِّمَۃِ ؕ
১. তাদেরকে এছাড়া অন্য হুকুম দেয়া হয়নি যে, তারা যেন দীনকে আল্লাহর জন্য খালিস করে একমুখী হয়ে আল্লাহর দাসত্ব করে এবং নামাজ কায়েম করে ও জাকাত আদায় করে- এটাই সঠিক মজবুত দীন। (সূরা বায়্যিনাহ-৯৮: ৫)
مَنْ کَانَ یُرِیْدُ حَرْثَ الْاٰخِرَۃِ نَزِدْ لَهٗ فِیْ حَرْثِهٖ ۚ وَ مَنْ کَانَ یُرِیْدُ حَرْثَ الدُّنْیَا نُؤْتِهٖ مِنْهَا وَمَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَۃِ مِنْ نَّصِیْبٍ
২. যারা আখিরাতের চাষের জমি চায়, আমি তার কৃষিভূমি বাড়িয়ে দিই। আর যারা দুনিয়ার ক্ষেতফসল চায় তাকে দুনিয়া থেকেই কিছু দিয়ে থাকি। কিন্তু আখিরাতে তার কোনো হিস্যা নেই। (সূরা শুরা-৪২: ২০)
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّشْرِیْ نَفْسَهُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللهِ ؕ وَاللهُ رَءُوْفٌۢ بِالْعِبَادِ
৩. অপরদিকে মানুষের মধ্যে এমনও আছে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের জীবন দিয়ে দেয় এবং এমন বান্দাদের উপর আল্লাহর বড়ই মেহেরবান। (সূরা বাকারা-০২: ২০৭) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন- সূরা আলে ইমরান-২৯, সূরা নিসা-১৪৬, সূরা হুদ-১২৩, সূরা বনি ইসরাইল-১৮,১৯,৮৪, সূরা হাজ-৩৭, সূরা নামল-৭৮-৭৯, সূরা আহযাব-৩, সূরা দাহর-৯,
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ لاَ يَنْظُرُ اِلٰى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَلٰكِنْ يَنْظُرُ اِلٰى قُلُوْبِكُمْ وَ أَعْمَالِكُمْ ـ (مُسْلِمٌ : بَابُ تَحْرِيْمِ ظُلْمِ الْمُسْلِمِ)
১. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আল্লাহ তোমাদের চেহারা ও সম্পদের দিকে লক্ষ্য করেন না, বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও কার্যপ্রণালীর দিকে লক্ষ্য রাখেন। (মুসলিম: বাবু তাহরিমি জুলমিল মুসলিমি, ৪৬৫১)
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اِنَّمَا الْاَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَ اِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلَى الدُّنْيَا يُصِيْبُهَا أَوْاِلَى امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهٗ اِلٰى مَا هَاجَرَ اِلَيْهِ ـ (بُخَارِىْ: بَابُ كَيْفَ كَانَ بَدْءُ الْوَحْىِ )
২. হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি, যাবতীয় কাজের ফলাফল নিয়তের উপরেই নির্ভর করে । আর প্রতিটি লোক (পরকালে) তাই পাবে যা সে নিয়ত করেছে। সুতরাং যে ব্যক্তি হিজরাত করে দুনিয়ার দিকে, তাকে অর্জন করার জন্য অথবা কোন মহিলার দিকে তাকে বিয়ে করার জন্য তাহলে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যই গণ্য হবে (বুখারী )
· ঈমান
· আল-কুরআন
· وَ الْعَصْرِۙ
· اِنَّ الْاِنْسَانَ لَفِیْ خُسْرٍۙ
· اِلَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ
· وَ تَوَاصَوْا بِالْحَقِّ ۙ۬ وَ تَوَاصَوْا بِالصَّبْ۠رِ
১. সময়ের কসম, নিশ্চয় আজ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততায় নিপতিত, তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।(সূরা আসর ১০৩:১-৩)
اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ ثُمَّ لَمْ یَرْتَابُوْا وَ جٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الصّٰدِقُوْنَক্স
২. তারাই সত্যিকার মুমিন, যারা আল্লাহ ও রাসূলের ওপর ঈমান এনেছে, এরপর এতে কোন সন্দেহ করেনি এবং আল্লাহর পথে তাদের জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করেছে। এরাই সাচ্চা লোক। (সূরা হুজুরাত- ৪৯:১৫)
اَلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ۚ وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ الطَّاغُوْتِ فَقَاتِلُوْۤا اَوْلِیَآءَ الشَّیْطٰنِ ۚ اِنَّ كَیْدَ الشَّیْطٰنِ كَانَ ضَعِیْفًا۠ক্স
৩. যারা ঈমান এনেছে, তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে, আর যারা কুফরি করেছে তারা তাগুতের পথে লড়াই করে। তাই শয়তানের সাথীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাও। জেনে রাখ, শয়তানের চাল আসলে বড়ই দুর্বল। (সূরা নিসা- ০৪:৭৬)
اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ ؕ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ مَلٰٓىِٕكَتِهٖ وَ كُتُبِهٖ وَ رُسُلِهٖ ۫ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ ۫ وَ قَالُوْا سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ؗۗ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ اِلَیْكَ الْمَصِیْرُ
৪. রাসূল ঐ হেদায়াতের উপর ঈমান এনেছেন, যা তাঁর রবের পক্ষ থেকে তাঁর উপর নাজিল হয়েছে এবং যারা এ রাসূলকে মানে তারাও ঐ হেদায়াতকে মন থেকে মেনে নিয়েছে। তারা সবাই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণকে মানে। আর তারা বলে: আমরা আল্লাহর রাসূলগণের একজন থেকে আর একজনকে আলাদা করি না, আমরা হুকুম শুনেছি আনুগত্য কবুল করেছি। হে আমাদের রব! আমরা আপনার কাছে গুনাহ মাফ চাই এবং আপনারই কাছে আমাদের ফিরে যেতে হবে। (সূরা বাকারা- ০২:২৮৫)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لِمَ تَقُوْلُوْنَ مَا لَا تَفْعَلُوْنَ
৫. হে ঈমানদারগণ, তোমরা তা কেন বল, যা তোমরা কর না? (সূরা সফ-২)
উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন, সূরা বাকারা- ৩, ৬২, ৮৫, ২৫৬, ২৫৭, সূরা আলে ইমরান- ৮৪, ১৭৫, ১৭৯, সূরা নিসা- ২৫,৭৬, সূরা মায়েদা- ১,৮৭-৮৮, সূরা আনয়াম- ৪৮,৮২, সূরা আরাফ- ৯৬, সূরা আনফাল- ৪, সূরা ইউসুফ- ৬৩-৬৪. সূরা নাহল-৯৭,৯৯, সূরা মারইয়াম- ৯৬, সূরা হাজ্জ- ২৩. সূরা মু’মিনূন- ১-৩. সূরা নূর-৬২. সূরা যুমার- ১০. সূরা মোমেন- ৫১, সূরা হাদিদ-১২, সূরা হাশর-১০,২১, সূরা সফ- ২-৩,১১,১২, সূরা তাগাবুন- ২,৮,
· হাদিস
عَنْ اَنَسٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يُؤْمِنُ اَحَدُكُمْ حَتّٰى يُحِبَّ لِاَخِيْهِ مَا يُحِبَّ لِنَفْسِه ـ (بُخَارِىْ: بَابُ مِنَ الْاِيْمَانِ أَنْ يُّحِبَّ لِأَخِيْهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِه، مُسْلِمٌ: بَابُ الدَّلِيْلِ عَلٰى أَنَّ مِنْ خِصَالِ الْاِيْمَانِ)
১. হযরত আনাস ” নবী করীম সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, নবী করীম # ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্য হতে কেহই ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে। (বুখারী : বাবু মিনাল ঈমানি আন ইউহিব্বা লি আখিহি মা ইউহিব্বু লিনাফসিহি, ১২) (মুসলিম: বাবুদ দালিলি আলা আন্না মিন খিছালিল ঈমান, ৬৪)
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتّٰى يَكُوْنَ هَوَاهُ تَبْعًا لِمَا جِئْتُ بِهِ (اَلْاِبَانَةُ الْكُبْرٰى لِاِبْنِ بَطَّةَ، صَحَّحَهُ الْاَلْبَانِىْ)
তাওহিদ
· আল-কুরআন
وَ اِلٰهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِیْمُ۠ক্স
১. তোমাদের ইলাহ একই ইলাহ। ঐ রহমান ও রাহিম ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। (সূরা বাকারা- ২:১৬৩)
وَ هُوَ اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ؕ لَهُ الْحَمْدُ فِی الْاُوْلٰی وَ الْاٰخِرَةِ ؗ وَ لَهُ الْحُكْمُ وَ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ
২. তিনিই এক আল্লাহ, যিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। দুনিয়া ও আখিরাতের সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। শাসন কর্তৃত্ব তাঁরই হাতে এবং তাঁরই দিকে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। (সূরা কাসাস- ২৮ঃ৭০)
قُلْ هُوَ اللّٰهُ اَحَدٌۚ
اَللّٰهُ الصَّمَدُۚ
لَمْ یَلِدْ ۙ
۬ وَ لَمْ یُوْلَدْۙ
وَ لَمْ یَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ۠
৩. (হে রাসূল!) আপনি বলে দিন। তিনিই আল্লাহ, (যিনি) একক (অদ্বিতীয়) আল্লাহ সবার কাছ থেকে অভাবমুক্ত (আর আল্লাহর কাছে সবাই অভাবী)। তাঁর কোনো সন্তান নেই, তিনিও কারো সন্তান নন। কেউই তাঁর সাথে তুলনার যোগ্য নয়। (সূরা ইখলাস- ১১২:১-৪)
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
৪. আল্লাহ ঐ চিরজীবী ও চিরস্থায়ী সত্তা, তিনি ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই। তিনি ঘুমান না, এমনকি তাঁর ঘুমের ভাবও হয় না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সব তাঁরই। কে আছে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর দরবারে সুপারিশ করতে পারে? যা কিছু বান্দাদের সামনে আছে তাও তিনি জানেন, আর যা তাদের অগোচরে আছে তাও তিনি জানেন। যা কিছু তাঁর জ্ঞানের মধ্যে আছে তা থেকে কিছুই তাদের আয়ত্তে আসতে পারে না। অবশ্য কোনো বিষয়ের জ্ঞান যদি তিনি নিজেই কাউকে দিতে চান তাহলে আলাদা কথা। তাঁর শাসন আসমান ও জমিন জুড়ে আছে এবং এসবের দেখাশোনার কাজ তাঁকে ক্লান্ত করতে পারে না। তিনি মহান ও শ্রেষ্ঠতম। (সূরা বাকারা- ০২:২৫৫)
٢٢ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۖ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ
٢٣ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
٢٤ هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ ۖ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ ۚ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
৫. তিনিই আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছুই তিনি জানেন। তিনিই রাহমান ও রাহিম। তিনিই আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। তিনিই বাদশাহ, অতি পবিত্র, স্বয়ং শান্তি, নিরাপত্তাদাতা, রক্ষক, সবার উপর বিজয়ী, নিজ হুকুম জারি করায় শক্তিমান এবং অহঙ্কারের অধিকারী। মানুষ তাঁর সাথে যে শিরক করছে তা থেকে আল্লাহ পবিত্র। তিনিই আল্লাহ, যিনি সৃষ্টির পর পরিকল্পনাকারী, তা বাস্তবায়নকারী ও সে অনুযায়ী রূপদাতা। সব ভালো নাম তাঁরই। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবই তাঁর তাসবিহ করছে। তিনি মহাশক্তিশালী ও সুকৌশলী। (সূরা হাশর- ৫৯:২২-২৪)
উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা বাকারা- ২৯,১৬৩, সূরা আলে ইমরান- ১৮,২৬,৬২, সূরা মায়েদা-৭৩,৭৬. সূরা আনয়াম- ১৭,১৯,৪৬,৭৬-৭৮,১৬৪,১৭৩, সূরা আরাফ-৫৪, সূরা ইউনুস- ২২, সূরা রা’দ- ১৬, সূরা ইব্রাহিম- ৫২, সূরা নাহল-২২,৫১,৭৩, সূরা ত্বহা- ১৪,৮৪, সূরা আম্বিয়া- ২২,২৫, সূরা ম’মিনূন-৯১,৯২, সূরা নূর- ৪৪, সূরা নামল- ৬০, সূরা কাছাছ- ৭১,৭২, সূরা ইয়াছিন- ৩৩-৩৫, সূরা ছোয়াদ- ৬৫, সূরা মোমেন- ৬৫, সূরা হা-মিম আস সাজদা- ৬, সূরা যোখরুখ -৮৪, সূরা ক্বাফ -৭-৮, সূরা মুলক- ৩-৫,
· হাদিস
عَنْ مَعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَفَاتِيْحُ الْجَنَّةِ شَهَادَةُ اَنْ لَّا اِلٰـهَ اِلَّا اللهُ.
১. হযরত মু’য়াজ বিন জাবাল ” হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, বেহেশতের চাবি হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এই কথা বলে সাক্ষ্য দেয়া। (মুসনাদে আহমাদ)
عَنْ اَبِـىْ ذَرٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مِنْ عَبْدٍ قَالَ لَا اِلٰـهَ اِلَّا اللهُ ثُمَّ مَاتَ عَلٰى ذٰلِكَ اِلَّا دَخَلَ الْجَنَّةَ.
২. অর্থ : হযরত আবু যার (রা) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যদি ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর……….’’ ঘোষণা করেন, অতঃপর এ কথার উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে মারা যায় তবে অবশ্যই সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম)
রিসালাত
· আল-কুরআন
هُوَ الَّذِیْۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَهٗ بِالْهُدٰی وَ دِیْنِ الْحَقِّ لِیُظْهِرَهٗ عَلَی الدِّیْنِ كُلِّهٖ ؕ وَ كَفٰی بِاللّٰهِ شَهِیْدًاؕক্স
১. তিনিই ওই সত্তা, যিনি তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন, যাতে (রাসূল) ঐ দ্বীনকে অন্য দ্বীনের উপর বিজয়ী করেন। আর এ বিষয়ে আল্লাহই সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট। (সূরা ফাতহ্-৪৮:২৮)
وَ مَاۤ اَرْسَلْنٰكَ اِلَّا كَآفَّةً لِّلنَّاسِ بَشِیْرًا وَّ نَذِیْرًا وَّ لٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا یَعْلَمُوْنَক্স
২. (হে নবী!) আমি আপনাকে গোটা মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে পাঠিয়েছি। কিন্তু বেশির ভাগ লোকই তা জানে না। (সূরা সাবা- ৩৪:২৮)
فَلَا وَ رَبِّكَ لَا یُؤْمِنُوْنَ حَتّٰی یُحَكِّمُوْكَ فِیْمَا شَجَرَ بَیْنَهُمْ ثُمَّ لَا یَجِدُوْا فِیْۤ اَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَیْتَ وَ یُسَلِّمُوْا تَسْلِیْمًا
৩.না, হে রাসূল! আপনার রবের কসম, এরা কখনো ঈমানদার হতে পারবে না; যে পর্যন্ত এরা নিজেদের মতবিরোধের বিষয়ে আপনাকে বিচারক হিসেবে মেনে না নেয়, তারপর যে ফয়সালাই আপনি দিন তা মেনে নিতে তাদের মন খুঁত খুঁত না করে এবং তা মনে-প্রাণে গ্রহণ না করে। (সূরা নিসা-০৪: ৬৫)
لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ
৪. দেখ! তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন, যিনি তোমাদের মধ্য থেকেই একজন। যা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর তাতে তিনি কষ্ট পান। তিনি তোমাদের হিতকামী। ঈমানদারদের জন্য তিনি বড়ই স্নেহশীল ও রহমদিল। (সূরা তাওবা- ০৯:১২৮)
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِیْ رَسُوْلِ اللّٰهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَانَ یَرْجُوا اللّٰهَ وَ الْیَوْمَ الْاٰخِرَ وَ ذَكَرَ اللّٰهَ كَثِیْرًؕ
৫. আসলে তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে সুন্দর আদর্শ রয়েছে, এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও শেষদিনের আশা করে এবং বেশি করে আল্লাহকে স্মরণ করে। (সূরা আহযাব- ৩৩ঃ২১) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা বাকারা- ১১৯, সূরা আলে ইমরান- ২০,৩১,৭৯,১১৪,১৪৪,১৬৪. সূরা নিসা- ৭৯,১৩,১৬৫, সূরা মায়েদা- ৬৭,৯২,৯৯, সূরা আনয়াম- ১২৪, সূরা আরাফ- ১৫,৫৯,৭৩,১৫, সূরা আনফাল- ২০, সূরা তাওবা- ১২৮, সূরা ইউসুফ- ৪৭,১০৯, সূরা রা’দ- ৭,৩০,৪০, সূরা ইব্রাহিম- ৪,৫,১০-১১, সূরা নাহল-৩৬,৮৪, সূরা বনি ইসরাইল- ১০৫, সূরা সাবা- ২৮. সূরা আম্বিয়া -১০৭, সূরা আহযাব -৬,২১,৪০,৪৫-৪৬, সূরা ফাতের- ২৪, সূরা ইয়াছিন- ২-৩, সূরা হুজুরাত- ১, সূরা হাশর- ৭, সূরা সফ- ৬ ,
· হাদিস
عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُؤْمِنُ اَحَدُكُمْ حَتّٰى اَكُوْنَ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ وَّالِدِه وَوَلَدِه وَالنَّاسِ اَجْمَعِيْنَ.
১. হযরত আনাস ” হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, তোমাদের কেউই ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ মু’মিন হতে পারবে না, যে পর্যন্ত আমি (তথা আমার আদর্শ) তার কাছে তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সকল মানুষ অপেক্ষা অধিক প্রিয় না হব। (বুখারী ও মুসলিম)
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُؤْمِنُ اَحَدُكُمْ حَتّٰى يَـكُوْنَ هَوَاهُ تَبْعًا لِمَا جِئْتُ بِه (اَلْاِبَانَةُ الْكُبْرٰى لِاِبْنِ بَطَّةَ، صَحَّحَهُ الْاَلْبَانِىْ)
২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, তোমাদের কেহই ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার প্রবৃত্তি আমার আনীত দ্বীনের অনুগত না হবে। (ইবানাতুল কুবরা লিইবনি বাত্তাহ : ২১৯)
আখেরাত
· আল-কুরআন
اِنَّ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ زَیَّنَّا لَهُمْ اَعْمَالَهُمْ فَهُمْ یَعْمَهُوْنَؕ
১. আসলে যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাদের আমলকে আমি তাদের চোখে সুন্দর বানিয়ে দিয়েছি। তাই তারা দিশেহারা হয়ে ফিরছে। (সূরা নামল-২৭:৪)
فَمَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَیْرًا یَّرَهٗؕ – وَمَنْ یَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا یَّرَهٗ۠
২. অতঃপর যে বিন্দু পরিমাণ ভালো কাজ করবে, সে তা দেখতে পাবে। আর যে বিন্দু পরিমাণ খারাপ কাজ করবে, সে তাও দেখতে পাবে। (সূরা যিলযাল-৯৯:৭-৮)
اَلْیَوْمَ نَخْتِمُ عَلٰۤی اَفْوَاهِهِمْ وَ تُكَلِّمُنَاۤ اَیْدِیْهِمْ وَ تَشْهَدُ اَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ
৩. আজ আমি তাদের মুখ বন্ধ করে দিচ্ছি। তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা সাক্ষ্য দিবে যে, তারা দুনিয়াতে কী কামাই করে এসেছে। (সূরা ইয়াসিন- ৩৬:৬৫)
یَوْمَ لَا تَمْلِكُ نَفْسٌ لِّنَفْسٍ شَیْـًٔا ؕ وَ الْاَمْرُ یَوْمَىِٕذٍ لِّلّٰهِ۠
৪. এটা সেই দিন, যেদিন কেউ কারো জন্য কিছু করতে পারবে না এবং সেদিন ফয়সালার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে থাকবে। (সূরা ইন্ফিতার- ৮২:১৯)
٣٤ يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ34
٣٥ وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ35 ٣٦ وَصَاحِبَتِهِ وَبَنِيهِ36
٣٧ لِكُلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ
৫. সেদিন মানুষ তার ভাই, মা, বাপ ও বিবি-বাচ্চাদের থেকে পালাতে থাকবে। সেদিন প্রত্যেককে একটি চিন্তা ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে। (সূরা আবাসা- ৮০:৩৪-৩৭) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা বাকারা- ৪৫, ৪৬, ৪৮, ৭২-৭৩, ১১৩, ১৫৪, ১৪৮, ১৬৫-১৬৭, ১৭৪, ২৫৪, ২৫৫, সূরা আলে ইমরান-৭০,৯৪,১৬৪,১৬৯-১৭১, সূরা আনয়াম-৩২,৯২, সূরা আরাফ- ৬,১৪৭, সূরা আনফাল- ৬৭, সূরা ইউনুস- ৩,৫-৬,২৭-৩০,৫৭, সূরা রা’দ- ৫, সূরা ইব্রাহিম- ৪৪-৪৫,৫১, সূরা হুদ- ১০৩, সূরা নাহল- ২২,৩০,৮৬,৮৭,৯৩, সূরা ম’মিনূন-৭৪, সূরা শুয়ারা- ৮৮,৮৯, সূরা নামল- ৪৪,৮৯-৯০, সূরা কাছাছ-৮৩, সূরা ইয়াছিন- ৩৩,৭৭-৭৮, সূরা হা-মিম আস সাজদা-৪৬,৪৮, সূরা শূ-রা-২০,৪৬, সূরা হাদিদ- ২০,২১, সূরা জুমুয়াহ-৮, সূরা ক্বেয়ামাহ- ৩,৪,৩৭-৪০, সূরা এনফেতর- ১-৫,১৫-১৯, সূরা আলা -১৭, সূরা গাশিয়াহ- ১,৩, সূরা লাইল-১৩-১৪, সূরা তাকাসসুর-৮,
· হাদিস
عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا تَزُوْلُ قَدَمُ ابْنِ اٰدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّه حَتّٰى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ عُمُرِه فِيْمَ أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيْمَ أَبْلَاهُ وَمَالِه مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَه وَفِيْمَ أَنْفَقَه وَمَاذَا عَمِلَ فِيْمَا عَلِمَ ـ (اَلتِّرْمِذِىْ: بَابُ مَاجَاءَ فِىْ شَاْنِ الْحِسَابِ وَالْقِصَاصِ حَسَّنَهُ الْاَلْبَانِىْ)
১. হযরত ইবনে মাসউদ ” নবী সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, কিয়ামতের দিন কোন আদম সন্তানের পা এক কদমও নড়তে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে পাঁচটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা না হবে। ১. নিজের জীবনকাল সে কোন কাজে অতিবাহিত করেছে? ২. যৌবনের শক্তি সামর্থ্য কোথায় ব্যয় করেছে? ৩. ধন-সম্পদ কোথা থেকে উপার্জন করেছে? ৪. কোথায় তা ব্যয় করেছে? ৫. এবং সে (দ্বীনের) যতটুকু জ্ঞান অর্জন করেছে সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে? (তিরমিযী : বাবু মাজা’আ ফি শানিল হিসাবি ওয়াল ক্বিসাসি, ২৩৪০)
সালাত
· আল-কুরআন
اَلَّذِیْنَ اِنْ مَّكَّنّٰهُمْ فِی الْاَرْضِ اَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوةَ وَ اَمَرُوْا بِالْمَعْرُوْفِ وَ نَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ ؕ وَ لِلّٰهِ عَاقِبَةُ الْاُمُوْرِ
১. তারাই ঐ সব লোক, যাদেরকে যদি আমি পৃথিবীতে ক্ষমতা দিই, তাহলে তারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত আদায় করে, ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। আর সকল বিষয়ের পরিণাম আল্লাহরই হাতে। (সূরা হাজ-২২ : ৪১)
اَقِمِ الصَّلٰوةَ لِدُلُوْكِ الشَّمْسِ اِلٰی غَسَقِ الَّیْلِ وَ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ ؕ اِنَّ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُوْدًا
২. (হে নবী!) সূর্য ঢলে যাওয়ার পর থেকে রাতের অন্ধকার হওয়া পর্যন্ত নামাজ কায়েম করুন। আর ফজরের (নামাজে) আল-কুরআন পড়–ন, কেননা ফজরে আল-কুরআন পড়ার সময় (ফেরেশতারা) হাজির থাকে। (সূরা বনি ইসরাইল-১৭:৭৮)
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ ارْكَعُوْا مَعَ الرّٰكِعِیْنَ
৩. সালাত কায়েম কর, জাকাত দাও এবং যারা আমার সামনে নত হয় (রুকুকারী) তাদের সাথে তোমরাও নত হও (রুকু কর) (সূরা বাকারা-০২:৪৩)
وَ اسْتَعِیْنُوْا بِالصَّبْرِ وَ الصَّلٰوةِ ؕ وَ اِنَّهَا لَكَبِیْرَةٌ اِلَّا عَلَی الْخٰشِعِیْنَۙক্স الَّذِیْنَ یَظُنُّوْنَ اَنَّهُمْ مُّلٰقُوْا رَبِّهِمْ وَ اَنَّهُمْ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ۠
৪. সবর ও নামাজ দ্বারা তোমরা সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই নামাজ খুব মুশকিল কাজ। কিন্তু ঐসব অনুগত লোকদের জন্য মুশকিল নয়, যারা মনে করে যে, শেষ পর্যন্ত তাদেরকে আপন রবের সাথে দেখা করতেই হবে এবং তাঁরই কাছে ফিরে যেতে হবে। (সূরা বাকারা, ০২:৪৫-৪৬)
اُتْلُ مَاۤ اُوْحِیَ اِلَیْكَ مِنَ الْكِتٰبِ وَ اَقِمِ الصَّلٰوةَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰی عَنِ الْفَحْشَآءِ وَ الْمُنْكَرِ ؕ وَ لَذِكْرُ اللّٰهِ اَكْبَرُ ؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ مَا تَصْنَعُوْنَ
৫. (হে নবী!) আপনার প্রতি অহির মাধ্যমে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে তা আপনি তিলাওয়াত করুন এব নামাজ কায়েম করুন। নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে। আর আল্লাহর জিকর এর চেয়েও বড় জিনিস। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা জানেন। (সূরা আনকাবুত-২৯ঃ৪৫)
উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন, সূরা বাকারা- ৪৩,১১০,১২৫,১৩৮, সূরা নিসা-১০১-১০৩, সূরা মায়েদা-৬,১২,৫৫, সূরা তাওবা-৫,১১,৭১, সূরা হুদ-১১৪, সূরা বনি ঈসরাইল-৭৮-৭৯, ১১০, সূরা ত্বহা-১৩০-১৩২, সূরা আম্বিয়া- ৭৩, সূরা ম’মিনূন-২, সূরা নূর- ৩৭, সূরা ফুরকান-৬৩-৭৪, সূরা আনকাবুত- ৪৫, সূরা রোম-৩৯,৫৫, সূরা জুমুয়াহ-৯, সূরা মাউন-৪-৫
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَبْرِدُوْا بِالصَّلَاةِ فَاِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ ـ (بُخَارِىْ : بَابُ صِفَةِ النَّارِ)
১. হযরত আবু সাঈদ খুদরী ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাঃ বলেছেন, (গরমকালে যুহরের নামাজ গরমের প্রচন্ডতা কমলে) নামাজ ঠান্ডার সময় পড়। কেননা গরমের প্রচন্ডতা জাহান্নামের শ্বাস থেকেই উৎসারিত। (বুখারী: বাবু ছিফাতিন নারি, ৩০১৯)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلَاةَ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِيْنَ دَرَجَةً ـ (بُخَارِىْ بَابُ فَضْلِ صَلَاةِ الْجَمَاعَةِ، (مُسْلِمْ: بَابُ فَضْلِ صَلَاةِ الْجَمَاعَةِ وَبَيَانِ التَّشْدِيْدِ فِى التَّخَلَّفِ عَنْهَا)
২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর ” থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেন, একাকী নামাজ পড়ার চাইতে জামাআতে নামাজ পড়ার ফজিলত সাতাশ গুণ বেশি। (বুখারী: বাবু ফাদলি সালাতিল জামাআতি, ৬০৯; মুসলিম: বাবু ফাদলি সালাতিল জামাআতি, ১০৩৮)
যাকাত
· আল-কুরআন
وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ
১. যারা জাকাতের ব্যাপারে কর্মতৎপর হয়। (সূরা মুমিনূন- আয়াত: ২৩:৪)
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ
২। সালাত কায়েম কর জাকাত দাও এবং যারা আমার সামনে নত হয় (রুকুকারী) তাদের সাথে তোমরাও নত হও (রুকু কর)। (সূরা বাকারা- আয়াত: ০২:৪৩)
الَّذِينَ لَا يُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُم بِالْآخِرَةِ هُمْ كَافِرُونَ
৩। যারা জাকাত আদায় করে না, তারাই আখেরাত অস্বীকারকারী। (সূরা হামিম আস সাজদাহ- আয়াত: ৪১:৭)
এছাড়া সূরা বাকারা- ৮৩,২৩,১৭৭,২১১,২৬১,২৭১,২৭৩,২৭৪,২৭৭. সূরা মায়েদা- ১২, সূরা মারইয়াম- ৩১,৫৫, সূরা মুমিনুল- ১৪, সূরা ফাতির-২৯,৩০, সূরা রুম- ৩৯, সূরা মা’আরিফ- ২৪,২৫। ইমরান- ৯২, সূরা তওবা- ৪১, ৩৪, ৩৫।
· হাদিস
عنْ جَرِيْرِبْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ بَايَعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى اِقَامِ الصَّلَاةِ وَ اِيْتَاءِ الزَّكَاةِ وَ النُصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ ـ (بُخَارِىْ: بَابُ قَوْلِ النَّبِىِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدِّيْنُ النَّصِيْحَةُ ، مُسْلِمْ : بَابُ بَيَانِ اَنَّ الدِّيْنَ النَّصِيْحَةُ)
হযরত জারির ইবনে আবদুল্লাহ ” বলেন, আমি নবী করীম সাঃ এর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেছি নামাজ কায়েম করার জন্য, জাকাত দেয়ার জন্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের কল্যাণ কামনার জন্য। (বুখারী: বাবু ক্বাওলিন নাবিয়্যি আদ দ্বীনু আন নাসিহাতু, ৫৫; মুসলিম: বাবু বায়ানি আন্নাদ দ্বিনা আননাসিহাতু, ৮৩)
সাওম
· আল-কুরআন
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَیْكُمُ الصِّیَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَۙ
১. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে, যেমন তোমাদের আগের নবীগণের উম্মতের উপর ফরজ করা হয়েছিল। এর ফলে আশা করা যায়, তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণ পয়দা হবে। (সূরা বাকারা ০২:১৮৩)
اَیَّامًا مَّعْدُوْدٰتٍ ؕ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَّرِیْضًا اَوْ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ وَ عَلَی الَّذِیْنَ یُطِیْقُوْنَهٗ فِدْیَةٌ طَعَامُ مِسْكِیْنٍ ؕ فَمَنْ تَطَوَّعَ خَیْرًا فَهُوَ خَیْرٌ لَّهٗ ؕ وَ اَنْ تَصُوْمُوْا خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
২. কয়েকটি নির্দিষ্ট দিনের রোজা। যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয় অথবা সফরে থাকে, তাহলে সে অন্য সময় যেন এ দিনগুলোর রোজা আদায় করে নেয়। আর যারা রোজা রাখতে সক্ষম (হয়েও রোজা রাখে না) তারা যেন ‘ফিদ্ইয়া’ দেয়। এক রোজার ফিদইয়া হলো একজন মিসকিনকে খাওয়ানো। যদি তোমরা বুঝ তাহলে রোজা রাখাই তোমাদের জন্য বেশি ভালো। (সূরা বাকারা-০২:১৮৪)
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِیْۤ اُنْزِلَ فِیْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰی وَ الْفُرْقَانِ ۚ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْیَصُمْهُ ؕ وَ مَنْ كَانَ مَرِیْضًا اَوْ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیْدُ اللّٰهُ بِكُمُ الْیُسْرَ وَ لَا یُرِیْدُ بِكُمُ الْعُسْرَ ؗ وَ لِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَ لِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىكُمْ وَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ
৩. রমজান ঐ মাস, যে মাসে আল-কুরআন নাজিল করা হয়েছে; যা মানুষের জন্য পুরোটাই হেদায়াত, যা এমন স্পষ্ট উপদেশে পূর্ণ যে, তা সঠিক পথ দেখায় এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে। তাই এখন থেকে যে ব্যক্তি এ মাস পায় তার অবশ্য কর্তব্য, সে যেন পুরো মাস রোজা রাখে। আর যে অসুস্থ বা সফরে থাকে, সে যেন অন্য সময় ঐ দিনগুলোর রোজা করে নেয়। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা-ই চান, যা কঠিন তা তিনি চান না। তোমাদেরকে এ জন্যই এ নিয়ম দেয়া হয়েছে, যাতে তোমরা রোজার সংখ্যা পূর্ণ করতে পার, আর যে হেদায়াত আল্লাহ তোমাদেরকে দিয়েছেন এর জন্য তোমরা আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ করতে পার এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে পার। (সূরা বাকারা-০২:১৮৫) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন, সূরা কদর- ১,৫, সূরা দুখান-২-৫, সূরা বাকারা ৯৯, ৯৬, ১২৫, ১৫৮, ১৯৫, ১৯৭, সূরা আলে ইমরান- ৯৬,৯৭, সূরা মায়েদা- ১,৯৫,৯৬, সূরা তাওবা-৩, সূরা হজ- ২৬-২৭,২,২৯, সূরা ফাতাহ- ২৭,
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رضـ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ اِيْمَانًا وَاِحْتِسَابًا غُفِرَ لَه مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه ـ (بُخَارِىْ: بَابُ صَوْمِ رَمَضَانَ اِحْتِسَابًا مِنَ الْاِيْمَانِ، مسلم: باب التَّرْغِيْبِ فِى قِيَامِ رَمَضَانَ وَهُوَ التَّرَاوِيْحُ)
১. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে লোক রমজান মাসের রোজা রাখবে ঈমান ও চেতনা সহকারে তার পূর্ববর্তী সকল গুনা ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারী: বাবু সাওমি রামাদানা ইহতিসাবান মিনাল ঈমান, ৩৭; মুসলিম বাবুত তারগিব ফি ক্বিয়ামি রামাদানা, ১২৬৮)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رضـ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ لَّمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّوْرِ وَالْعَمَلَ بِهِ فَلَيْسَ لِلّٰهِ حَاجَةٌ فِىْ أَنْ يَّدَعَ طَعَامَه وَ شَرَابَه ـ (بُخْارِىْ: بَابُ مَنْ لَّمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّوْرِ)
২. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা এবং তদনুযায়ী আমল পরিত্যাগ করতে পারল না, তবে এমন ব্যক্তির পানাহার পরিত্যাগ করার আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। (বুখারী, বাবু মান লাম ইয়াদা’ ক্বাওলায যূরি: ১৭৭০)
হজ
· আল-কুরআন
وَ اَذِّنْ فِی النَّاسِ بِالْحَجِّ یَاْتُوْکَ رِجَالًا وَّعَلٰی كُلِّ ضَامِرٍ یَّاْتِیْنَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِیْقٍ
১. আর আপনি সকল মানুষের হজের জন্য ডাক দিন। তারা (এ ডাকে সাড়া দিয়ে) দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে ও উটে চড়ে আসবে। (সূরা হাজ- ২২:২৭)
اِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَۃَ مِنْ شَعَآئِرِ اللهِ ۚ فَمَنْ حَجَّ الْبَیْتَ اَوِاعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِ اَنْ یَّطَّوَّفَ بِهِمَا ؕ وَمَنْ تَطَوَّعَ خَیْرًا ۙ فَاِنَّ اللهَ شَاکِرٌ عَلِیْمٌ
২. নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনগুলোর মধ্যে গণ্য। তাই যে আল্লাহর ঘরের হাজ বা উমরা করে, তাদের জন্য এ দুটো পাহাড়ের মাঝখানে দৌড়ানো কোনো গুনাহের কাজ নয়। আর যে নিজের মর্জি ও আগ্রহে কোনো ভালো কাজ করবে, আল্লাহর তা জানা আছে এবং তিনি এর মূল্য দেবেন । (সূরা বাকারা- ২:১৫৮)
اَجَعَلْتُمْ سِقَایَۃَ الْحَآجِّ وَعِمَارَۃَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ کَمَنْ اٰمَنَ بِاللهِ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَجٰهَدَ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ ؕ لَا یَسْتَوٗنَ عِنْدَ اللهِ ؕ وَاللهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ
৩. তোমরা কি হাজিদের পানি পান করানো ও মসজিদে হারামের খেদমত করাকে ঐ লোকদের কাজের সমান মনে করে নিয়েছো, যে ঈমান এনেছে আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি এবং যে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করেছে? আল্লাহর কাছে তো এরা দুজন সমান নয়। আর আল্লাহ জালিম কাওমকে হেদায়াত করেন না । (সূরা তাওবা-৯:১৯) উপরোক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরো দেখুন, সূরা বাকারা-১২৫, ১৯৬, ১৯৭-১৯৯, সূরা আলে ইমরান-৯৭, সূরা হজ-২৮-৩৭, সূরা আল ফাতাহ-২৭।
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ حَجَّ هٰذَا الْبَيْتَ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَمَا وَلَدَتْهٗ أُمُّهٗ ـ (بُخَارى: بَابُ قَوْلِ اللهِ تَعَالٰى (فَلَا رَفَثَ) مُسْلِمْ: بَابَ فُضْلِ الْحَجِّ وَ الْفُمْرَةِ وَ يَوْمِ عَرَفَةَ)
১. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি এ ঘরে হজ করতে আসল, অতঃপর স্ত্রী সংগম করেনি, কোন প্রকার অশ্লীলতায় নিমজ্জিত হয়নি, তবে সেখান থেকে তেমন পবিত্র হয়ে) ফিরে আসে, যেমন নিষ্পাপ অবস্থায় তার মা তাকে ভূমিষ্ঠ করেছিল। (বুখারী: বাবু ক্বাওলিল্লাহি ‘‘ফালা রাফাছা’’ ১৬৯০; মুসলিম: বাবু ফাদলিল হাজ্জি ওয়াল উমরাতি: ২৪০৪)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَىُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ فَقَالَ اِيْمَانٌ بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ قِيْلَ ثُمَّ مَذَا قَالَ الْجِهَادُ فِىْ سِبِيْلِ اللهِ قِيْلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ حَجُّ مَبْرُوْرٌ ـ (بُخَارِىْ: بَابُ مَنْ قَالَ اِنَّ الْاِيْمَانَ هُوَ الْعَمَلُ ، مُسْلِمْ: بَابَ بَيَانِ كَوْنِ بَيَانِ كَوْنِ الْاِيْمَانِ بِاللهِ تَعَالٰى أَفْضَلُ الْاَعْمَالِ)
২. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন আমল অধিক উত্তম? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান। জিজ্ঞেস করা হল, তারপর কোনটি? তিনি বললেন কবুল হওয়া হজ। (বুখারী: বাবু মান ক্বালা ইন্নাল ঈমানা হুয়াল আমালু, ২৫; মুসলিম: বাবু বায়ানি কাওনিল ঈমানি বিল্লাহি আফদালুল আ’মালি: ১১৮
শাহাদাত
· আল-কুরআন
وَلَا تَقُوْلُوْا لِمَنْ یُّقْتَلُ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ اَمْوَاتٌ ؕ بَلْ اَحْیَآءٌ وَّلٰکِنْ لَّا تَشْعُرُوْنَ
১. যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়, তাদেরকে মৃত বল না। এরা তো আসলে জীবিত। কিন্তু তাদের জীবন সম্পর্কে তোমাদের ধারণা হয় না। (সূরা বাকারা-০২:১৫৪)
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ قُتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ اَمْوَاتًا ؕ بَلْ اَحْیَآءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ یُرْزَقُوْنَ
২. যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত মনে করো না। তারা তো আসলে জীবিত। তারা তাদের রবের কাছে রিজিক পাচ্ছে। (সূরা আলে ইমরান-০৩:১৬৯)
وَمَنْ یُّطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَاُولٰٓئِکَ مَعَ الَّذِیْنَ اَنْعَمَ اللهُ عَلَیْهِمْ مِّنَ النَّبِیّٖنَ وَالصِّدِّیْقِیْنَ وَالشُّهَدَآءِ وَالصّٰلِحِیْنَ ۚ وَحَسُنَ اُولٰٓئِکَ رَفِیْقًا
৩. যারা আল্লাহ ও রাসূলের কথা মেনে চলবে তারা ঐসব লোকের সাথেই থাকবে, যাদের উপর আল্লাহ নিয়ামত বর্ষণ করেছেন। তাঁরা হলেন-নবী, সিদ্দিক, শহীদ ও সালিহ (নেক) লোকগণ। তাঁরা কতই না ভালো সাথী। (সূরা নিসা-০৪ঃ৬৯) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন, সূরা বাকারা- ১৫৪, সূরা আলে ইমরান- ৭০,১৪০,১৫৭,১৬৯,১৯৫, সূরা নিসা- ৬৯,৭৪, সূরা হাজ-৫৮, সূরা মু’মিনূন- ২৮, সূরা ফুরকান- ৬৩-৭৪, সূরা আহযাব- ২৩, সূরা ইয়াছিন- ২৬, সূরা মোহাম্মদ-৪, সূরা হাদিদ-১৯, সূরা বুরুজ- ৮-৯।
· হাদিস
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِ و بْنِ الْعَاصِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يُغْفَرُ لِلشَّهِيْدِ كُلُّ ذَنْبٍ اِلَّا الدَّيْنَ ـ
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আ’স থেকে বর্নিত। রাসূলে করীম সাঃ বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা (বান্দাহর) শহীদের সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন, শুধুমাত্র ঋণ ব্যতীত। (মুসলিম)
عَنْ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ رَضَىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَاَلَ اللهُ تَعَالَى الشَّهَادَةَ بِصدْقٍ بَلَّغَهُ اللهُ مَنَازِلَ الشُّهَدَاءِ وَاِنْ مَاتَ عَلٰى فِرَاشِه ـ
২. হযরত সাহাল ইবনে হানিফ ” থেকে বর্ণিত। রাসূলে করিম # বলেছেন যে, ব্যক্তি আন্তরিকভাবে আল্লাহর নিকট শাহাদাত প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে শাহদাতের মর্যাদা দান করবেন । যদি সে ঘরে তার বিছানায় ও মৃত্যুবরণ করে (মুসলিম)
লক্ষ ও উদ্দেশ্য
· আল-কুরআন
اِنِّیْ وَجَّهْتُ وَجْهِیَ لِلَّذِیْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ حَنِیْفًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الْمُشْرِكِیْنَۚ
১. আমি তো একমুখী হয়ে তাঁর দিকেই আমার মুখ ফিরালাম, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং আমি কখনো মুশরিকদের মধ্যে শামিল নই। (সূরা আন’আম- ০৬:৭৯)
قُلْ اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ
২. (হে রাসূল!) বলুন, নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার সবরকম ইবাদত, আমার হায়াত, আমার মওত সবকিছুই আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জন্য। (সূরা আন’আম- ০৬:১৬২)
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّشْرِیْ نَفْسَهُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ رَءُوْفٌۢ بِالْعِبَادِ
৩. অপরদিকে মানুষের মধ্যে কেউ এমনও আছে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত বিক্রি করে দেয় এবং এমন বান্দাদের উপর আল্লাহ বড়ই মেহেরবান। (সূরা বাকারা- ০২:২০৭)
اِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰی مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اَنْفُسَهُمْ وَ اَمْوَالَهُمْ بِاَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ؕ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ فَیَقْتُلُوْنَ وَ یُقْتَلُوْنَ ۫ وَعْدًا عَلَیْهِ حَقًّا فِی التَّوْرٰىةِ وَ الْاِنْجِیْلِ وَ الْقُرْاٰنِ ؕ وَ مَنْ اَوْفٰی بِعَهْدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسْتَبْشِرُوْا بِبَیْعِكُمُ الَّذِیْ بَایَعْتُمْ بِهٖ ؕ وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ
৪. (আসল ব্যাপার হলো) আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জান ও মাল বেহেশতের বদলে কিনে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে, (দুশমনকে) মারে এবং (নিজেরাও) নিহত হয়। তাদেরকে (বেহেশত দেওয়ার ওয়াদা) আল্লাহর দায়িত্বে একটি মজবুত ওয়াদা-যা তাওরাত, ইনজিল ও কুরআনে (করা হয়েছে)। ওয়াদা পালনে আল্লাহর চেয়ে বেশি যোগ্য আর কে আছে? সুতরাং তোমরা আল্লাহর সাথে যে বেচা-কেনার কারবার করেছ, সে বিষয়ে খুশি হয়ে যাও। এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা (সূরা তাওবাহ- ০৯:১১১)
وَ مَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَ الْاِنْسَ اِلَّا لِیَعْبُدُوْنِ
৫. আমি জিন ও মানবজাতিকে আমার ইবাদত করা ছাড়া আর কারো গোলামির উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি। (সূরা যারিয়াত- ৫১:৫৬)
উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন -সূরা বাকারা -১৪৩,১৬৫,২০৭, সূরা আলে ইমরান -১১০, নিসা- ৪৬, সূরা তাওবা- ১১১, সূরা মায়েদা- ৩৫, সূরা যুমার -২,১০,১১, সূরা হুদ- ৫০, আল বাইয়্যিনাহ- ৫,৮
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ اُمَامَةَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّه قَالَ مَنْ أَحَبَّ لِلّٰهِ وَأَبْغَضَ لِلّٰهِ وَ أَعْطٰى لِلّٰهِ وَمَنَعَ لِلّٰهِ فَقَدْ اِسْتَكْمَلَ الْاِيْمَانَ ـ (اَبُوْ دَاؤُدَ: بَابُ الدَّلِيْلِ عَلٰى زِيَادَةِ الْاِيْمَانِ وَنُقْصَانِهِ)
১. হযরত আবু উমামা ” রাসূল সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে (কাউকে) ভালোবাসল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, শত্রুতা পোষণ করল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, কিছু দান করল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, আর দান থেকে বিরত থাকল তাও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, সেই ঈমানের পূর্ণতা লাভ করল। (আবু দাউদ, বাবুদ দালিলি আলা যিয়াদাতিল ঈমানি ওয়া নুকসানিহি)
عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُؤْمِنُ اَحَدُكُمْ حَتّٰى اَكُوْنَ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ وَّالِدِه وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ اَجْمَعِيْنَ.
২. হযরত আনাস ” বলেন। রাসূল সাঃ বলেছেন, তোমাদের কেউ মু’মিন হতে পারবে না, যে পর্যন্ত না আমি তার নিকট তার পিতা-মাতা, তার সন্তান-সন্ততি এবং সমস্ত মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় হই। (মিশকাত)
عَنِ عَبَّسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ ا للهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاقَ طَعْمَ الْاِيْمَانِ منْ رَضِىَ بِاللهِ رَبًّاوَ بِالْاِسْلَامِ دِيْنًا وَّبِمُحَمَّدٍ رَسُوْلًاـ
৩. হযরত অব্বাস বিন মুত্তালিব ” বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, সে-ই ঈমানের প্রকৃত স্বাদ পেয়েছে, যে, আল্লাহকে রব, ইসলামকে জীবনব্যবস্থা (দ্বীন) এবং মুহাম্মদ সাঃ কে রাসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্টি হয়েছে (বুখারী ও মুসলিম)
عَنْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْ لُ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَنْهِ وَسَلَّمِ لَا يُؤْمِنُ اَحَدُ كُمْ حَتّٰى اَكُوْنَ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ وَّالِدِه وَ وَلَدِه وَالنَّاسِ اَجْمَعِيْنَ ـ
৪. হযরত আনাস ” বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না যে পর্যন্ত না আমি তার নিকট তার পিতা-মাতা, তার সন্তান-সন্ততি এবং সমস্ত মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় হই। (মিশকাত)
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَفَاتِيْحُ الْجَنَّةِ شَهَادَةُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا للهُ
৫. হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল ” হতে বর্ণিত । তিনি বলেন রাসূল সাঃ বলেছেন, বেহেশতের চাবি হচ্ছে এ কথার সাক্ষী দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। (বুখারী)
দাওয়াত
· আল-কুরআন
اُدْعُ اِلٰی سَبِیْلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَ الْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَ جَادِلْهُمْ بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ ؕ اِنَّ رَبَّكَ هُوَ اَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِیْلِهٖ وَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِیْنَ
১. (হে নবী!) হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আপনি মানুষকে আপনার রবের পথে ডাকুন। আর তাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করতে হলে সুন্দরভাবে করুন। আপনার রবই বেশি জানেন যে, কে তাঁর পথ থেকে সরে আছে, আর কে সঠিক পথে আছে। (সূরা নাহ্ল- ১৬:১২৫)
وَ مَنْ اَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَاۤ اِلَی اللّٰهِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیْ مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ
২. তার চেয়ে আর কে উত্তম কথার অধিকারী হতে পারে যে (মানুষকে) ডাকে আল্লাহর পথে, সৎকর্ম করে এবং বলে নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত (হা-মিম আস-সাজদাহ- ৪১:৩৩)
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اِنَّاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّ مُبَشِّرًا وَّ نَذِیْرًاۙক্স وَّ دَاعِیًا اِلَی اللّٰهِ بِاِذْنِهٖ وَ سِرَاجًا مُّنِیْرًا
৩. হে নবী! আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে, সুখবরদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে, আল্লাহর অনুমতিতে তাঁর দিকে দাওয়াতদাতা বানিয়ে এবং উজ্জ্বল বাতি হিসাবে। (সূরা আহযাব- ৩৩: ৪৫-৪৬)
١ يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ1
٢ قُمْ فَأَنْذِرْ2
٣ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ
৪. হে কম্বল মুড়ি দিয়ে শায়িত ব্যক্তি! ওঠ এবং সাবধান কর এবং তোমার রবের বড়ত্ব প্রচার কর। (সূরা মুদ্দাস্সির-৭৪:১-৩)
اِنَّاۤ اَرْسَلْنٰكَ بِالْحَقِّ بَشِیْرًا وَّ نَذِیْرًا ؕ وَ اِنْ مِّنْ اُمَّةٍ اِلَّا خَلَا فِیْهَا نَذِیْرٌ
৫. নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সত্য সহকারে সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী হিসেবে পাঠিয়েছি। আর এমন কোন উম্মত গত হয়নি, যাদের মধ্যে কোনো সতর্ককারী আসেনি। (সূরা ফাতির- ৩৫:২৪)
উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন- সূরা বাকারা – ১৪০,২০৮, সূরা আল ইমরান- ১০৪, ১১০, সূরা মায়েদা-৬৭, সূরা ইউনুস- ২৫ সূরা ইউসুফ- ১০৮, সূরা ইব্রাহিম- ৫, সূরা বনি ইসরাইল- ৫৩, সূরা কাহাফ- ২৯, সূরা আরাফ- ৫৯,৭৩,৮৫,১৬৫, সূরা শূরা- ১৫,
· হাদিস
عَنِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَسِّرُوْا وَلَا تُعَسِّرُوْا وَبَشِّرُوْا وَلَا تُنَفِّرُوْا ـ (بُخَارِىْ: بَابُ مَا كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَخَوَّلُهُمْ بِالْمَوْعِظَةِ وَالْعِلْمِ كَـىْ لَا يَنْفِرُوْا)
১. হযরত আনাস ইবনে মালেক ” নবী করীম সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী করীম সাঃ ইরশাদ করেছেন, তোমরা সহজ কর, কঠিন করো না, সুসংবাদ দাও, বীতশ্রদ্ধ করো না। (বুখারী, বাবু মা কানান নাবিয়্যু সাঃ ইয়াতাখাওয়ালুহুম বিল মাওইযাতি ওয়াল ইলমি কায় লা ইয়ানফিরু- ৬৭)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ دَعَا اِلٰى هُدًى كَـانَ لَه مِنَ الْاَجْرِ مِثْلُ اُجُوْرِ مَنْ تَبِعَه لَا يَنْقُصُ ذٰلِكَ مِنْ اُجُوْرِهِمْ شَيْئًا.
২. হযরত আবু হুরাইরা ” হতে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তির দাওয়াতে কেউ হিদায়াত প্রাপ্ত হয়, তাহলে দা’য়ীর জন্য (পুরস্কার) প্রতিদান হল হিদায়াতপ্রাপ্ত ব্যক্তির সমান। এতে তার অংশের কোন কমতি হয় না। (মুসলিম)
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍ و اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ بَلِّغُوْا عَنِّىْ وَلَوْ اۤيَةً وَحَدِّثُوْا عَنْ بَنِىْ اِسْرَائِيْلَ وَلَا حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدً افَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهٗ مِنَ النَّارِ- ــ (بُخَارِىْ: بَابُ مَاذُكِرَ عنْ بَنِىْ اِسْرَائِيْلَ)
৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ” থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাঃ ইরশাদ করন, একটি আয়াত হলেও তা আমার পক্ষ থেকে প্রচার কর। আর বনি ইসলাইল সম্পর্কে আলোচনা কর, তাতে কোন দোষ নেই। যে ব্যক্তি আমার প্রতি ইচ্ছাপূর্বক মিথ্যা আরোপ করে, তার নিজ ঠিকানা জাহান্নামে সন্ধান করা উচিত। (বুখারী, বাবু মা যুকিরা আন বানি ইসরাইল, ৩২০২)
عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِه لَتَأْ مُرُنَّ بِالْمَعْرُوْفِ وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الْمُنْكَىِ أَوْ لَيُو شِكَنَّ اللهُ اَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عِقَابًا مِنْهُ ثُمَّ تَدْعُوْنَهٗ فَلَا يُسْتَجَابُ لَكُمْ ــ (ترمذى : بَابُ مَا جَاءَ فِى الْاَمْرِ بِالْمَعْرُوْفِ وَالنَّهْىِ عَنِ الْمُنْكَرِ)
৪. হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান ” নবী করীম সাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী করীম সাঃ এরশাদ করেছেন, আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, যার নিয়ন্ত্রণে আমার জীবন, অবশ্যই তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দিবে এবং অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে লোককে বিরত রাখবে নতুবা তোমাদের উপর শীঘ্রই আল্লাহর গজব নাজিল হবে। অতঃপর তোমরা (তা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য) দোয়া করতে থাকবে কিন্তু তোমাদের দোয়া কবুল করা হবে না। (তিরমিযী:- ২০৯৫)
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَن رَأى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِه فِاِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فِبِلِسَانِه فِاِنْ لَّمْ يَسْتَطِع فَبِقَلْبِه وَذٰلِكَ اَضْعَفُ الْاِيْمَانِ ــ (مُسْلِمٌ : بَابُ بَيَانِ كَوْنِ النَّهْىِ عَنِ الْمُنْكَرِ مِنَ الْاِيْمَانِ)
৫. হযরত আবু সাঈদ খুদরী ” নবী করীম সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ যখন কোন খারাপ কাজ হতে দেখে সে যেন তা হাত দিয়ে প্রতিরোধ করে। যদি সে এ ক্ষমতা না রাখে তবে যেন মুখের কথার দ্বারা (জনমত গঠন করে) তা প্রতিরোধ করে। যদি সে এ ক্ষমতাটুকু না রাখে তবে যেন অন্তরের দ্বারা (পরিকল্পিত উপায়ে) এটা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। (বা এর প্রতি ঘৃণা পোষণ করে) আর এটা হলো ঈমানের দুর্বলতম (নিম্নতম ) স্তর। (মুসলিম -৭০)
সংগঠন
· আল-কুরআন
اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الَّذِیْنَ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِهٖ صَفًّا كَاَنَّهُمْ بُنْیَانٌ مَّرْصُوْصٌ
১. নিশ্চয়ই আল্লাহ ঐসব লোককে পছন্দ করেন, যারা তাঁর পথে এমনভাবে কাতারবন্দী হয়ে লড়াই করে, যেন তারা সীসা গলানো মজবুত দেয়াল। (আস্ সাফ্- ৬১: ০৪)
وَ لَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِیْنَ تَفَرَّقُوْا وَ اخْتَلَفُوْا مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآئَتْهُمُ الْبَیِّنٰتُ ؕ وَ اُولٰٓىِٕكَ لَهُمْ عَذَابٌ عَظِیْمٌۙ
২. তোমরা যেন ঐ লোকদের মতো হয়ে না যাও, যারা বহু দলে ভাগ হয়ে গিয়েছে এবং অত্যন্ত স্পষ্ট হেদায়াত পাওয়ার পরও যারা মতভেদে লিপ্ত হয়েছে। যারা এমন আচরণ করেছে তারা সেদিন কঠোর শাস্তি পাবে। (সূরা আলে ইমরান- ০৩: ১০৫)
كُنْتُمْ خَیْرَ اُمَّةٍ اُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ تَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَ تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ ؕ وَ لَوْ اٰمَنَ اَهْلُ الْكِتٰبِ لَكَانَ خَیْرًا لَّهُمْ ؕ مِنْهُمُ الْمُؤْمِنُوْنَ وَ اَكْثَرُهُمُ الْفٰسِقُوْنَ
৩. তোমরাই দুনিয়ার ঐ সেরা উম্মত যাদেরকে মানবজাতির হেদায়াত ও সংশোধনের জন্য আনা হয়েছে। তোমরা নেক কাজের আদেশ কর ও মন্দ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখ এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখ। আহলে কিতাবগণ যদি ঈমান আনত তাহলে তাদের জন্যই তা ভাল ছিল। যদিও তাদের কিছু লোক ঈমানদারও পাওয়া যায়, কিন্তু তাদের বেশির ভাগই নাফরমান। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ১১০)
وَ لْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّةٌ یَّدْعُوْنَ اِلَی الْخَیْرِ وَ یَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ یَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ ؕ وَ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
৪. তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক তো অবশ্যই থাকা উচিত, যারা নেকি ও কল্যাণের দিকে ডাকবে, ভালো কাজের হুকুম দেবে এবং খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে। যারা এ কাজ করবে তারাই সফল হবে। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ১০৪)
وَ اعْتَصِمُوْا بِحَبْلِ اللّٰهِ جَمِیْعًا وَّ لَا تَفَرَّقُوْا ۪
৫. তোমরা সংঘবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। (সূরা আল ইমরান-১০৩) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন
সূরা বাকারা-১৪৩, সূরা আলে ইমরান -১০১,১০৩, সূরা নিসা -১৪৬,১৭৫, সূরা তাওবা -৭১, সূরা হাজ্জ- ৭৮, সূরা আহযাব- ২৩, সূরা শূ-রা- ১৩, সূরা ম’মিনূন- ৫২, সূরা সফ- ৪,১৪,
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِذَا كَانَ ثَلَاثَةٌ فِىْ سَفَرٍ فَلْيُؤَمِّرُوْا اَحَدَهُمْ ـ (اَبُوْ دَاؤدَ: بَابٌ فِى النِّدَاءِ عِنْدَ النَّفِيْرِ يَا خَيْلَ اللهِ ارْكَبِىْ)
১. হযরত আবু হুরায়রা ” বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যখন কোন তিনজন ব্যক্তি সফরে থাকে, তখন যেন একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়। (আবু দাউদ: বাবুন ফিন নিদাই ইনদাল নাফিরি ইয়া খাইলাল্লাহির কাবী,২২৪২)
عَنْ اَبِىْ ذَرٍّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَقَدْ خَلَعَ رِبْقَةَ الْاِسْلَامِ مِنْ عُنُقِه ـ اَبُوْ دَاؤدَ: بَابٌ فِىْ قَتْلِ الْخَوَارِجِ)
২. হযরত আবু যর ” বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে সংগঠন থেকে এক বিঘত পরিমাণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, সে তার ঘাড় থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলল (আবু দাউদ: বাবুনফী ক্বাতলিল খাওয়ারিজি- ৪১৩১)
عَنِ الْحَارِثِ الْاَشْعَرِىِّ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَنَا اۤمُرَنَّكُمْ بِخَمْسٍ اَللهُ أَمَرَنِىْ بِهِنَّ بِالْجَمَاعَةِ وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَالْهِجْرَةِ وَالْجِهَادِ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ فِاِنَّهٗ مَنْ خَرَجَ مِنَ الْجَمَاعَةِ قِيْدَ شِبْرٍ فَقَدْ خَلَعَ رِبْقَةَ الْاِسْلَامِ مِنْ عُنُقِه اِلَّا أَن يَّر جِعَ وَمَنْ دَعَا بِدَعْوٰى الْجَاهِلِيَّةِ فَهُوَ مِنْ جُثَاءِ جَهَنَّمَ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَاِنْ صَامَ وَصَلّٰى قَالَ وَاِنْ صَامَ وَصَلّٰى وَزَعَمَ أَنَّهٗ مُسْلِمٌ فَادْعُوْا ا لْمُسْلِمِيْنَ بِمَا سَمَّاهُمْ الْمُسْلِمِيْنَ الْمُؤْ مِنِيْنَ عِبَادَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ــ ( مُسْنَدِ اَحْمَدَ : حَدِيْثُ الْحَارِثِ الْاَشْعَرِىِّ عَنِ النَّبِىِّ )
৩. হযরত হারিসুল আশয়ারী ” থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাঃ বলেছেন, আমি তোমাদেরকে পাঁচটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি যেগুলোর ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ১. জামায়াতবদ্ধ হবে ২. নেতার আদেশ মন দিয়ে শুনবে ৩. তার আদেশ মেনে চলবে ৪. আল্লাহর পথে হিজরত করবে ৫. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে, আর তোমাদের মধ্য হতে যে সংগঠন হতে বিঘত পরিমাণ দূরে সরে গেল, সে তার গর্দান থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলল তবে যদি ফিরে আসে তা ভিন্ন কথা। আর যে ব্যক্তি (মানুষদেরকে) জাহেলিয়াতের দিক আহবান জানায় সে জাহান্নামি। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাঃ ! সে যদি রোজা রাখে, নামাজ পড়ে, এরপরও? রাসূল সাঃ বললেন, যদি রোজা রাখে, নামাজ পড়ে এবং নিজেকে মুসলমান বলে দাবি করে এরপরও জাহান্নামি হবে। তবে তোমরা মুসলমানদের ডাকো যেভাবে তিনি (আল্লাহ) তাদের নামকরণ করেছেন মুসলিম, মু’মিন এবং আল্লাহর বান্দা হিসেবে। (মুসনাদে আহমাদ: হাদিসুল হারিসিল আশয়ারী আনিন নাবিয়্যি, ১৬৫৪২)।
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَا اِسْلَامَ اِلَّا بِجَمَاعَةٍ وَ لَا جَمَاعَةَ اِلَّا بِاِمَارَةٍ وَلَا اِمَارَةَ اِلَّا بِطَاعَةٍ ـ
৪. হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব ” হতে বর্ণিত তিনি বলেন, সংগঠন ব্যতীত ইসলাম নেই, আর নেতৃত্ব ব্যতীত সংগঠন নেই এবং আনুগত্য ব্যতীত নেতৃত্ব নেই। (আসার)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَهَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمِ يَقُوْلُ مَنْ خَرَجَ مِنَ الطَّاعَةِ وَفَرَقَ الْجَمَاعَةِ فَمَاتَ مَاتَ مَيْتَةً جَاهِلِيَّةً ـ
৫. হযরত আবু হুরায়রা ” হতে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আল্লাহর রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আমিরের আনুগত্যকে অস্বীকার করত জামায়াত পরিত্যাগ করল এবং সেই অবস্থায় সে মারা গেল সে জাহেলিয়াতর মৃত্যুবরণ করল (মুসলিম শরীফ)
প্রশিক্ষণ
· আল-কুরআন
هُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّٖنَ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِهٖ وَ یُزَكِّیْهِمْ وَ یُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ ۗ وَ اِنْ كَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍۙ
১. তিনিই সেই সত্তা, যিনি উম্মিদের মধ্যে তাদেরই একজনকে রাসূল হিসেবে পাঠিয়েছেন, যে তাদেরকে তাঁর আয়াত শোনান, তাদের জীবন পবিত্র করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন। অথচ এর আগে তারা স্পষ্ট গোমরাহিতে পড়ে ছিল। (সূরা জুমুআ-৬২: ২)
كَمَاۤ اَرْسَلْنَا فِیْكُمْ رَسُوْلًا مِّنْكُمْ یَتْلُوْا عَلَیْكُمْ اٰیٰتِنَا وَ یُزَكِّیْكُمْ وَ یُعَلِّمُكُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ وَ یُعَلِّمُكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَؕ
২. যেমন (তোমরা এভাবে সফলতা লাভ করেছে) আমি তোমাদের নিকট তোমাদেরই মধ্য থেকে একজন রাসূল পাঠিয়েছি, যিনি তোমাদেরকে আমার আয়াত পড়ে শোনান, তোমাদের জীবনকে সঠিকভাবে গড়ে তোলেন, তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন এবং তোমাদের ঐসব কথা শেখান, যা তোমরা জানতে না। (সূরা বাকারা- ০২: ১৫১)
وَ یُعَلِّمُهُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ وَ التَّوْرٰىةَ وَ الْاِنْجِیْلَۚ
৩. (ফেরেশতারা আগের কথার জের টেনে বলল) আল্লাহ তাঁকে কিতাব ও হিকমতের শিক্ষা দিবেন এবং তাওরাত ও ইনজিলের ইলম শেখাবেন। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ৪৮)
١ الرَّحْمَٰنُ1
٢ عَلَّمَ الْقُرْآنَ2
٣ خَلَقَ الْإِنْسَانَ3
٤ عَلَّمَهُ الْبَيَانَ
৪. অতি বড় মেহেরবান আল্লাহ এ আল-কুরআনের শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে কথা বলা শিখিয়েছেন। (সূরা আর-রাহমান-৫৫: ১-৪)
وَ عَلَّمَ اٰدَمَ الْاَسْمَآءَ كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَی الْمَلٰٓىِٕكَةِ ۙ فَقَالَ اَنْۢبِـُٔوْنِیْ بِاَسْمَآءِ هٰۤؤُلَآءِ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ
৫. এরপর আল্লাহ আদমকে সব জিনিসের নাম শেখালেন। তারপর এসব জিনিসকে ফেরেশতাদের সামনে পেশ করে বললেন, যদি তোমাদের এ ধারণা সঠিক হয়ে থাকে (যে খলিফা নিয়োগ করলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে) তাহলে এসব জিনিসের নাম বল দেখি। (সূরা বাকারা-০২: ৩১)
উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন- সূরা বাকারা- ১২৯,১৫১,২৮২, সূরা নিসা-১১৩, সূরা রা’দ- ১৬, সূরা ফাতের-২৮, সূরা যুমার- ৯, সূরা রাহমান- ১-৪, সূরা মোজাদালাহ- ১১, সূরা জুমুয়াহ-২,
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ (رضـ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَعَلَّمُوا الْقُرْاٰنَ وَالْفَرَائِضَ وَعَلِّمُوْا النَّاسَ فَاِنِّىْ مَقْبُوْضٌ ـ (تِرْمِذِىْ: بَابٌ مَا جَاءَ فِىْ تَعْلِيْمِ الْفَرَائِضِ، ضَعَّفَهُ الْاَلْبَانِىْ)
১. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, আল-কুরআন এবং ফারায়েজ শিক্ষা গ্রহণ কর এবং মানুষকে শিক্ষা দাও। নিশ্চয়ই আমাকে উঠিয়ে নেয়া হবে। (তিরমিযী: বাবু মা জা’আ ফি তালিমিল ফারায়েযে, আলবানী একে দুর্বল বলেছেন, ২০১৭)
عَنْ عُثْمَانَ رَضِىَ اللهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْاٰنَ وَعَلَّمَه ـ (بُخَارِىْ: بَابُ خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْاٰنَ وَعَلَّمَه)
২. হযরত উসমান ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সেই হচ্ছে সর্বোত্তম ব্যক্তি যে, নিজে আল-কুরআন মাজিদ শিক্ষা গ্রহণ করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়। (বুখারী, বাবু খায়রুকুম মান তায়াল্লামাল আল-কুরআন ওয়া আল্লামাহু: ৪৬৩৯)
أَخْبَرْنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ أَنَّهٗ بلَغَهٗ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّ اللهِ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ بُعِثْتُ لِاُتَمِّمَ حُسْنَ الْاَخْلَاقِ ــ(مُؤْطَّا مَالِكِ : باب مَاجَاءَ فَى حُسْنِ الْخُلْقِ
৩. হযরত ইমাম মালেক (রাহ.) থেকে বর্ণিত, তার কাছে এই সংবাদ পৌঁছেছে, রাসূলুল্লাহ # বলেছেন, আমাকে সুন্দর, বলিষ্ঠ চরিত্রের পরিপূর্ণতা বিধানের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। (মুয়াত্তা মালেক, বাবু মা জা আফি হুসনিল খুলকি)
عَنْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ خَرَجَ فِىْ طَلَبِ الْعِلْمِ كَانَ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ حَتّٰى يَرْجِـعَ
৪. হযরত আনাস ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি ইলম হাসিল করার উদ্দেশ্যে বের হয় সে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহর পথে (জিহাদের মধ্যে) অবস্থান করে। (তিরমিযি)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْ لُ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ فَكَتَمَهُ اُلْجِمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ ـ
৫. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তিকে দীনের কোন ইলম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় এবং সে তা গোপন রাখে তাকে কিয়ামতের দিন আগুনের লাগাম পরানো হবে। (তিরমিযি ও আবু দাউদ)
ইসলামী শিক্ষা আন্দোলন ও ছাত্রসমস্যা
· আল-কুরআন
اِقْرَاْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِیْ خَلَقَۚ
خَلَقَ الْاِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍۚ
اِقْرَاْ وَ رَبُّكَ الْاَكْرَمُۙ
الَّذِیْ عَلَّمَ بِالْقَلَمِۙ
عَلَّمَ الْاِنْسَانَ مَا لَمْ یَعْلَمْؕ
১. পড়–ন (হে রাসূল!) আপনার রবের নাম নিয়ে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি জমাট রক্তের পি- (ভ্রুণ) থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আপনি পড়–ন, আপনার রব বড়ই দয়ালু। যিনি কলমের সাহায্য জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষকে তিনি এমন জ্ঞান দিয়েছেন, যা সে জানত না। (সূরা আলাক- ৯৬:১-৫)
كَمَاۤ اَرْسَلْنَا فِیْكُمْ رَسُوْلًا مِّنْكُمْ یَتْلُوْا عَلَیْكُمْ اٰیٰتِنَا وَ یُزَكِّیْكُمْ وَ یُعَلِّمُكُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ وَ یُعَلِّمُكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَؕۛ
২. যেমন আমি তোমাদের জন্য স্বয়ং তোমাদেরই মধ্য হতে একজন রাসূল পাঠিয়েছি, যে তোমাদেরকে আমার আয়াত পড়ে শুনায়, তোমাদের জীবন পরিশুদ্ধ ও উৎকর্ষিত করে তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমতের শিক্ষা দেয় এবং যেসব কথা তোমাদের জানা নেই তা জানিয়ে দেয়। (সূরা আল বাক্বারাহ-২:১৫১)
وَ اِذَا قُرِئَ الْقُرْاٰنُ فَاسْتَمِعُوْا لَهٗ وَ اَنْصِتُوْا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ
৩. যখন তোমাদের সামনে আল-কুরআন পড়া হয়, তখন মনোযোগের সাথে তা শুন এবং চুপ থাক। সম্ভবত এর মাধ্যমে তোমাদের প্রতি করুণা বর্ষিত হবে। (আল আ‘রাফ-৭:২০৪)
هُوَ الَّذِیْ بَعَثَ فِی الْاُمِّیّٖنَ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِهٖ وَ یُزَكِّیْهِمْ وَ یُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ ۗ
৪. তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের জন্য একজন নিরক্ষর রাসূল পাঠিয়েছেন। যিনি তাদেরকে আমার নিদর্শন (আয়াত) সমূহ পেশ করবেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন, তাদেরকে শিক্ষা দিবেন কিতাব ও (হিকমত) কলা-কৌশল। (সূরা আল জুমুআ-৬২:২)
كِتٰبٌ اَنْزَلْنٰهُ اِلَیْكَ مُبٰرَكٌ لِّیَدَّبَّرُوْۤا اٰیٰتِهٖ وَ لِیَتَذَكَّرَ اُولُوا الْاَلْبَابِ
৫. এ এক বরকতপূর্ণ কিতাব যা আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যেন লোকেরা এর আয়াতসমূহ সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণা করে এবং বিবেকবানেরা সবক গ্রহণ করে। (সূরা সোয়াদ-৩৮:২৯) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন- সূরা আলে ইমরান- ৭,১৮, (২৯০-২৯১), সূরা তাওবা- ১১২, সূরা রা’দ- ১৬,১৯ সূরা নাহল- ৪৪,৮৯, সূরা বনি ইসরাইল -৫৩, সূরা কাহ্ফ- ৭,৬৫,৬৬, সূরা ত্বহা- ১১৪, সূরা ম’মিনূন, সূরা হাজ্জ-৭৭, সূরা ফাতের-২৮, সূরা যুমার -৯,২৩ সূরা মুহাম্মদ- ২৪, সূরা নাজম -১৭,২৩, সূরা রাহমান-১-৪, সূরা মোজাদালাহ- ১১,
· হাদিস
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ (رضـ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيْضَةٌ عَلٰى كُلِّ مُسْلِمٍ ـ (بَيْهَقِىْ: شُعَبُ الْاِيْمَانِ)
১. হযরত আনাস ইবনে মালেক ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুসলিম (নর-নারীর) ব্যক্তির উপর ফরজ (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান: ১৬১৪)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ (رضـ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ خَرَجَ فِىْ طَلَبِ الْعِلْمِ كَـانَ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ حَتّٰى يَرْجِـعَ ـ (تِرْمِذِىْ: بَابُ اَفْضَلُ الْعِلْمِ)
২. হযরত আনাস ইবনে মালেক ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি ইলম (জ্ঞান) অন্বেষণে বের হয়, সে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহর পথেই থাকে। (তিরমিযি বাবু ফাদলি তলাবিল ইলমি-২৫৭১)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِذَا مَاتَ الْاِنْسَانُ اِنْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهٗ اِلّا مِنْ ثَلَاثَةٍ اِلَّا مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوِ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِه أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْ عُوْ لَهٗ ــ (مُسْلِمٌ : بَابُ مَا يَلْحَقُ الْاِنْسَانَ مَنَ الثَّوَابِ بعْدَ وَفَاتِه )
৩. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, মানুষ যখন মারা যায় তখন তিন প্রকার আমল ব্যতীত তার সকল আমলের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ১. সদকায়ে জারিয়াহ। ২. এমন জ্ঞান যা দ্বারা উপকার লাভ করা যায়। ৩. এমন নেককার সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। (মুসলিম, বাবু মা ইয়ালহাকুল ইনসানা মিনাছ সাওয়াবে বা-দা ওফাতিহি : ৩০৮৪)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهَ وَسَلَّمَ مَنْ سَلَكَ طَريْقًا يَلْتَمِسْ فِيْهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللهُ لَهٗ لَهٗ طَرِيْقًا اِلَى الْجَنَّةِ ــ (تِرْمِذِىْ : بَابُ فَضْلِ طَلْبِ ا لْعِلْمِ
৪. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি ইলম হাসিল করার জন্য কোন পথে চলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে যাবার পথ সহজ করে দেন। (তিরমিযী, বাবু ফাদলি তলাবিল ইলমি: ২৫৭০)
ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ
· আল-কুরআন
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا هَلْ اَدُلُّكُمْ عَلٰی تِجَارَةٍ تُنْجِیْكُمْ مِّنْ عَذَابٍ اَلِیْمٍ تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ تُجَاهِدُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ بِاَمْوَالِكُمْ وَ اَنْفُسِكُمْ ؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَۙ
১. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ! আমি কি তোমাদেরকে ঐ ব্যবসায়ের কথা বলব, যা তোমাদেরকে কষ্টদায়ক আজাব থেকে বাঁচাবে? তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের উপর ঈমান আন এবং তোমাদের জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ কর। এটাই তোমাদের জন্য অত্যন্ত ভালো, যদি তোমরা তা জান। (সূরা সাফ্-৬১:১০-১১)
وَ مَنْ جَاهَدَ فَاِنَّمَا یُجَاهِدُ لِنَفْسِهٖ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَغَنِیٌّ عَنِ الْعٰلَمِیْنَ
২. যে চেষ্টা-সাধনা করবে, সে তা নিজের ভালোর জন্যই করবে। নিশ্চয়ই গোটা সৃষ্টি জগতে কারো কাছে আল্লাহর কোনো ঠেকা নাই। (সূরা আনকাবূত-২৯: ৬)
اِنْفِرُوْا خِفَافًا وَّ ثِقَالًا وَّ جَاهِدُوْا بِاَمْوَالِكُمْ وَ اَنْفُسِكُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
৩. তোমরা বের হও, হালকা অবস্থায়ই হোক আর ভারী অবস্থায়ই হোক এবং তোমাদের জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ কর। তোমরা যদি জানো তাহলে এটাই তোমাদের জন্য ভালো। (সূরা তাওবা-০৯: ৪১)
وَ مَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ وَ الْمُسْتَضْعَفِیْنَ مِنَ الرِّجَالِ وَ النِّسَآءِ وَ الْوِلْدَانِ الَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَاۤ اَخْرِجْنَا مِنْ هٰذِهِ الْقَرْیَةِ الظَّالِمِ اَهْلُهَا ۚ وَ اجْعَلْ لَّنَا مِنْ لَّدُنْكَ وَلِیًّا ۙۚ وَّ اجْعَلْ لَّنَا مِنْ لَّدُنْكَ نَصِیْرًاؕ
৪. তোমাদের কি হলো যে, তোমরা ঐসব অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশুদের খাতিরে আল্লাহর পথে লড়াই করছ না, যাদেরকে দাবিয়ে রাখা হয়েছে এবং যারা ফরিয়াদ করছে, হে আমাদের রব! আমাদেরকে জালিমদের এ জনপদ থেকে উদ্ধার করো। আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারীর ব্যবস্থা কর। (সূরা নিসা-০৪: ৭৫)
اَلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ۚ وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ الطَّاغُوْتِ فَقَاتِلُوْۤا اَوْلِیَآءَ الشَّیْطٰنِ ۚ اِنَّ كَیْدَ الشَّیْطٰنِ كَانَ ضَعِیْفًا۠
৫. যারা ঈমান এনেছে, তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে, আর যারা কুফরি করেছে তারা তাগুতের পথে লড়াই করে। তাই শয়তানের সাথীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাও। জেনে রাখ, শয়তানের চাল আসলে বড়ই দুর্বল। (সূরা নিসা-০৪: ৭৬)
وَ قُلْ رَّبِّ اَدْخِلْنِیْ مُدْخَلَ صِدْقٍ وَّ اَخْرِجْنِیْ مُخْرَجَ صِدْقٍ وَّ اجْعَلْ لِّیْ مِنْ لَّدُنْكَ سُلْطٰنًا نَّصِیْرًا
৬. আর দোয়া করো, যে আমার রব! আমাকে যেখানেই তুমি নিয়ে যাও সত্যতার সাথে নিয়ে নাও এবং যেখান থেকেই বের করো সত্যতার সাথে বের করো এবং তোমার পক্ষ থেকে একটি কর্তৃত্বশীল পরাক্রান্ত ব্যক্তিকে আমার সাহায্যকারী বানিয়ে দাও। (সূরা বানী ইসরাইল-১৭:৮০) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন-সূরা বাকারা-৮৫, ১৯৩,২১৬,২১৮,২৫৬, সূরা আলে ইমরান- ১৩,১৪০-১৪৩,১৫১,১৫২-১৫৫,১৫৮,১৬৫-১৭১, সূরা নিসা- ৭৪,৮৪,৯৫,১০২. সূরা মায়েদা-৩৫,৫৪, সূরা আরাফ-৫৪. সূরা আনফাল- ১৫-১৮,৩৯,৪১-৪৮,৬০,৬৫, সূরা তাওবা -১৩-১৬,২০-২৬,৩৬,৩৮,৩৯,৭৩,১২৩, সূরা ইউনুস- সূরা ইউসুফ-৪০, সূরা হাজ-৩৯,৪১,৭৮, সূরা নূর- ৫৫, সূুরা আনকাবুত-৬৯, সূরা আহযাব-২৫-২৭, সূরা শূ-রা- ১৩, সূরা মোহাম্মদ-৪,৭,২০, সূরা ফাতাহ-২৫, সূরা হুজরাত -১৫, সূরা হাদিদ-২৫, সূরা মোজাদালাহ- সূরা সফ-৪,১১,১৪,
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ ذَرٍّ (رضـ) قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَىُّ الْاَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ قَالَ اَلْاِيْمَانُ بِاللهِ وَالْجِهَادُ فِىْ سَبِيْلِه ـ (مُسْلِمٌ: بَابُ بَيَانِ كَوْنِ الْاِيْمَانِ بِاللهِ تَعَالٰى أَفْضَلُ الْاَعْمَالِ)
১. হযরত আবুযর গিফারী ” বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল সাঃ , সবচেয়ে উত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর প্রতি ঈমান এবং তার পথে জিহাদ। (মুসলিম : বাবু বায়ানি কাওলিন ঈমানি বিল্লাহি তায়ালা আফদালুল আ’মালি- ১১৯)
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ (رضـ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوَلَا أَدُلُّكَ عَلٰى رَأْسِ الْاَمْرِ وَعُمُوْدِهِ وَذَرْوَةَ سَنَامَهِ أَمَّا رَأْسُ الْاَمْرِ فَالْاِسْلَامُ فَمَنْ أَسْلَمَ سَلِمَ وَأَمَّا عُمُوْدُه فَالصَّلَاةُ وَأَمَّا ذَرْوَةَ سَنَامِهِ فَالْجِهَادُ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ ـ (مُسْنَد اَحْمَدَ: حَدِيْثُ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ)
২. হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ # বলেছেন, আমি কি তোমাকে দ্বীনের মূল সূত্র, তার খুঁটি এবং সর্বোচ্চ চূড়ার সন্ধান দিব না? রাসূল সাঃ তার ইতিবাচক সাড়া পেয়ে বললেন, দ্বীনের মূল হলো ইসলাম, সুতরাং যে ইসলাম গ্রহণ করবে সে নিরাপত্তা লাভ করবে, খুঁটি হলো সালাত এবং তার সর্বোচ্চ চূড়া হলো আল্লাহর পথে জিহাদ। (মুসনাদে আহমাদ: হাদিস মুয়ায ইবনে জাবাল ” : ২১০৫৪)
عَنْ أَنَسٍ (رضـ) عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ جَاهِدُوْا الْمُشْرِ كِيْنَ بِأَمْوَا لِكُمْ وَأَيْدِيْكُمْ وَأَلْسِنَتِكُمْ ــ (اَلنَّسَائِىْ : بَابُ وُجُوْبِ الْجِهَادِ)
৩. হযরত আনাস ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, তোমরা তোমাদের সম্পদ, হাত ও মুখ দিয়ে মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করো। (নাসায়ী: বাবু উজুবিল জিহাদি: ৩০৪৫)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَغَدْوَةٌ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ أَوْ رَوْ حَةٌ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا ــ (بُخَارِىْ : بَابُ الْغَدْوَةِ و الرَّوْحَةَ فَىْ سَبِيْلِ اللهِ)
৪. হযরত আনাস ইবনে মালেক ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আল্লাহর পথে একটি সকাল ও একটি বিকাল ব্যয় করা দুনিয়া ও এর সমস্ত সম্পদ থেকে উত্তম। (বুখারী, বাবুল গাদওয়াতি ওয়ার রাওহাতি ফি সাবিল্লিহি: ২৫৮৩)
عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ وَضَعَ رِجْلَهٗ فِى الْغَرْزِ اىُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ؟ قَالَ كَلِمَةُ حَقٍ عِنْدَ سُلْطَانٍ جَائِرٍ (نَسَائِى : بَابُ فَضْلِ كَنْ تَكَلَّمَ بَالْحَقَّ عِنْدَ اِمَامٍ جَائِرِ)
৫. হযরত তারেক ইবনে শিহাব ” থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাঃ ঘোড়ার জিনে পা রাখার সময় এক ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করল, উত্তম জিহাদ কোনটি? তিনি বললেন, অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা। (নাসায়ী, বাবু ফাদলি মান তাকাল্লামা বিল হাক্কি ইনদা ইমামিন জায়িরিন : ৪১৩৮)
عَنْ عَبَايَةَ بْنِ رِفَاعَةَ قَالَ اَدْركَنِىْ أَبُوْ عَبْسٍ وَأَنَا أَذهَبُ اِلَى الْجُمُعَةِ فَقَالَ سَمِعْتُ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهْ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَنِ اغْبَرَّتْ قَدَمَاهُ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ حَرَّمَهُ اللهِ عَلَى النَّارِ ــ (بُخَارِىْ : بَابُ الْمَشْىِ اِلَى الْجُمُعَةِ)
৬. হযরত আবায়া ইবনে রিফায়া ” বলেন, আমি জুময়ার দিকে যাওয়ার সময় আবু আবছের সাথে সাক্ষাৎ হলো। অতঃপর তিনি বললেন, আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর পথে যার পদযুগল ধুলোয় মলিন হলো আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেন। (বুখারী, বাবুল মাশয়ি ইলাল জুময়াতি: ৮৫৬)
আনুগত্য
· আল-কুরআন
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَطِیْعُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ وَ اُولِی الْاَمْرِ مِنْكُمْ ۚ فَاِنْ تَنَازَعْتُمْ فِیْ شَیْءٍ فَرُدُّوْهُ اِلَی اللّٰهِ وَ الرَّسُوْلِ اِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ ذٰلِكَ خَیْرٌ وَّ اَحْسَنُ تَاْوِیْلًا۠
১. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ! (যদি তোমরা সত্যি আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান এনে থাক তাহলে) আল্লাহকে মেনে চল এবং রাসূলকে মেনে চল। আর তোমাদের মধ্যে যাদের হুকুম দেয়ার অধিকার আছে তাদেরকেও (মানো)। তারপর যদি তোমাদের মধ্যে কোনা বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয় তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও। এটাই সঠিক কর্মনীতি এবং শেষ ফলের দিক দিয়েও এটাই ভাল। (সূরা নিসা-০৪: ৫৯)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَطِیْعُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ وَ لَا تُبْطِلُوْۤا اَعْمَالَكُمْ
২. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ ও রাসূলের কথামতো চল। আর নিজেদের আমল নষ্ট করো না। (সূরা মুহাম্মদ-৪৭: ৩৩)
وَ مَنْ یُّطِعِ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ وَ یَخْشَ اللّٰهَ وَ یَتَّقْهِ فَاُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْفَآىِٕزُوْنَ
৩. যারা আল্লাহ ও রাসূলের হুকুম পালন করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর নাফরমানি থেকে বেঁচে থাকে তারাই সফলকাম। (সূরা নূর-২৪: ৫২)
وَ اَطِیْعُوا اللّٰهَ وَ الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَۚ
৪. আর আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো, আশা করা যায় তোমাদের উপর রহমত করা হবে! (সূরা আলে ইমরান-০৩: ১৩২)
تِلْكَ حُدُوْدُ اللّٰهِ ؕ وَ مَنْ یُّطِعِ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهٗ یُدْخِلْهُ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا ؕ وَ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ
৫. এসব আল্লাহর সীমা। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মেনে চলবে তাকে আল্লাহ এমন সব বাগানে প্রবেশ করাবেন, যার নিচ দিয়ে ঝরনা বইতে থাকবে। তারা সেখানে চিরদিন থাকবে। আর এটাই বড় সফলতা। (সূরা নিসা-০৪: ১৩)
উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন- সূরা আলে ইমরান-৩১,৩২,১৪৪, সূরা নিসা-৬৯,৮০, সূরা মায়েদা -২,৯২, সূরা আনফাল-২০,২৪,২৭, সূরা নূর-৫১-৫৪,৬২, সূরা শূয়ারা-১৩১, সূরা আহযাব-৩৬,৭১, সূরা হুজুরাত-১৪,
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَنْ خَرَجَ مِنَ الطَّاعَةِ وَفَارَقَ الْجَمَاعَةَ فَمَاتَ مَاتَ مِيْتَةً جَاهِلِيَّةً.
১. আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। নবী সাঃ বলেছেন: যে ব্যক্তি আনুগত্যের গন্ডি থেকে বের হয়ে যায় এবং জা’মায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, অতঃপর মৃত্যুবরণ করে, তার মৃত্যু হয় জাহিলিয়াতের মৃত্যু। (মুসলিম, ইমারাহ, হাদিস নং ৫৩ (১৮৪৮)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ اَنَّه سَمِـعَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ : وَمَنْ يُّطِعِ الْاَمِيْرَ فَقَدْ اَطَاعَنِىْ وَمَنْ يَّعْصِ الْاَمِيْرَ فَقَدْ عَصَانِىْ.
২. হযরত আবু হুরায়রা ” হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন: যে ব্যক্তি আমীরের আনুগত্য করলো সে আমারই আনুগত্য করলো। আর যে ব্যক্তি আমীরের অবাধ্য হলো সে আমারই অবাধ্য হলো। (বুখারী: অধ্যায় ৫৬ জিহাদ, অনুচ্ছেদ ১০৮ নেতার আদেশ শ্রবণ ও তার আনুগত্য করা, হাদিস নং-২৯৫৫)
পরামর্শ
আল-কুরআন
فَبِمَا رَحْمَۃٍ مِّنَ اللهِ لِنْتَ لَهُمْ ۚ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِیْظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِکَ ۪ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِی الْاَمْرِ ۚ فَاِذَا عَزَمْتَ فَتَوَکَّلْ عَلَی اللهِ ؕ اِنَّ اللهَ یُحِبُّ الْمُتَوَکِّلِیْنَ
১. হে রাসূল! এটা আল্লাহর বড়ই রহমত যে, আপনি এসব লোকের জন্য খুব নরম মেজাজবিশিষ্ট হয়েছেন। তা না হয়ে যদি আপনি কড়া ও পাষাণ মনের অধিকারী হতেন তাহলে তারা সবাই আপনার চারপাশ থেকে সরে যেত। তাদের দোষ মাফ করে দিন, তাদের পক্ষে মাগফিরাতের দোয়া করুন এবং দীনের কাজে তাদের সাথে পরামর্শ করুন। তারপর যখন আপনি কোনো মতের উপর মজবুত সিদ্ধান্তে পৌঁছেন তখন আল্লাহর উপর ভরসা করুন। আল্লাহ ঐসব লোককে ভালোবাসেন, যারা তাঁরই ভরসায় কাজ করে। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ১৫৯)
وَ الَّذِیْنَ اسْتَجَابُوْا لِرَبِّهِمْ وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ ۪ وَ اَمْرُهُمْ شُوْرٰی بَیْنَهُمْ ۪ وَ مِمَّا رَزَقْنٰهُمْ یُنْفِقُوْنَ
২. আর যারা তাদের রবের হুকুম মেনে চলে ও নামাজ কায়েম করে নিজেদের সব কাজ পরস্পর পরামর্শের ভিত্তিতে চালায় এবং তাদেরকে যে রিজিক দিয়েছে তা থেকে খরচ করে। (সূরা শুরা-৪২: ৩৮)
لَا خَیْرَ فِیْ کَثِیْرٍ مِّنْ نَّجْوٰىهُمْ اِلَّا مَنْ اَمَرَ بِصَدَقَۃٍ اَوْ مَعْرُوْفٍ اَوْ اِصْلَاحٍۭ بَیْنَ النَّاسِ ؕ وَمَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِکَ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللهِ فَسَوْفَ نُؤْتِیْـهِ اَجْرًا عَظِیْمًا
৩. তাদের বেশির ভাগ গোপন শলাপরামর্শেই কোন মঙ্গল থাকে না অবশ্য যদি কেউ গোপনে কাউকে দান-খয়রাত করার জন্য আদেশ করে অথবা কোন কাজ অথবা জনগণের মধ্যে সংশোধনমূলক কজের তাগিদ দেয় (তাহলে তা ভাল) আর যদি কেউ এসব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করে তাহলে তাকে আমি বিরাট প্রতিদান দেবো। (সূরা নিসা-৪:১১৪) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন- সূরা বকারা -২৩৩,
· হাদিস
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا كَانَ أُمَرَا ئُكُمْ خِيَارَكُمْ وَ اَغْنِيَاؤُكُمْ سُمَحَائَـكُمْ وَ أُمُوْرُكُمْ شُوْرٰى بَيْنَكُمْ فَظَهْرُ الْاَرْضَ خَيْرٌ لَّكُمْ مِنْ بَطْنِهَا وَ اِذَا كَانَ اُمَرَائُكُمْ شِرَارَكُمْ وَاَغْنِيَاؤُكُمْ بُخَلَائَـكُمْ وَ اُمُوْرُكُمْ اِلٰى نِسَائِكُمْ فَبَطْنُ الْارْضِ خَيْرٌ لَّكُمْ مِنْ ظَهْرِهَا ـ (تِرْمِذِىْ : بَابَ مَا جَاءَ فِى النَّهْىِ عَنْ سَبِّ الرِّيَاحِ ، ضَعَّفَهُ الْاَلْبَانِىْ)
১. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ # বলেছেন, যখন তোমাদের নেতারা হবেন ভালো মানুষ, ধনীরা হবেন দানশীল এবং তোমাদের কার্যক্রম চলবে পরামর্শের ভিত্তিতে তখন মাটির উপরিভাগ নিচের ভাগ হতে উত্তম হবে। আর যখন তোমাদের নেতারা হবে খারাপ লোক, ধনীরা হবে কৃপণ এবং নেতৃত্ব যাবে নারীদের হাতে, তখন পৃথিবীর উপরের অংশের চেয়ে নিচের অংশ হবে উত্তম। (তিরমিযী: বাবু মা জা’আ ফিন নাহি আন সাব্বির রিয়াহি, ২১৯২, আলবানী একে দুর্বল বলেছেন)
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطَبَ النَّاسَ فَحَمِدَ اللهَ وَ اَثْنٰى عَلَيْهِ وَ قَالَ مَا تُشِيْرُوْنَ عَلَىَّ فِىْ قَوْمٍ يَسُبُّوْنَ أَهْلِىْ مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِمْ مِنْ سُوْءٍ قَطْ ـ (بُخَارِىْ: بَابَ قُوْلِ اللهِ تَعَالٰى (وَاَمْرُهُمْ شُوْرٰى بِيْنَهُمْ)
২. হযরত আয়েশা ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ # লোকদের সামনে খুতবা দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পরে তিনি বললেন, যারা আমার পরিবারের কুৎসা করে বেড়াচ্ছে, তাদের সম্পর্কে আমার প্রতি তোমাদের কী পরামর্শ আছে? আমি কখনও তাদের মধ্যে কোনরূপ মন্দ কিছু দেখি নাই। (বুখারী: বাবু ক্বাওলিল্লাহি তায়ালা ‘ওয়া আমরুহুম শুরা বাইনাহুম’ ৬৮২২)
ইহতেসাব
আল-কুরআন
اِقْتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمْ وَهُمْ فِیْ غَفْلَۃٍ مُّعْرِضُوْنَ ۚ
১. লোকদের হিসাব-নিকাশের সময় খুব কাছে এসে গেছে। অথচ তারা গাফিলতির মধ্যে পড়ে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে। (সূরা আম্বিয়া-২১: ১)
وَ اِنَّهٗ لَذِكْرٌ لَّکَ وَ لِقَوْمِکَ ۚ وَ سَوْفَ تُسْـَٔلُوْنَ
২. আসলে সত্য হলো, এ কিতাব আপনার ও আপনার কওমের জন্য বিরাট মর্যাদার বিষয় এবং এ জন্য তোমাদেরকে শিগগিরই জবাবদিহি করতে হবে। (সূরা যুখরুফ-৪৩: ৪৪)
اِنَّ اِلَیْنَاۤ اِیَابَهُمْ ড় ثُمَّ اِنَّ عَلَیْنَا حِسَابَهُمْ
৩. এদেরকে আমারই দিকে ফিরে আসতে হবে। এরপর তাদের হিসাব নেয়া আমারই দায়িত্ব। (সূরা গাশিয়াহ, ৮৮: ২৫-২৬)
ثُمَّ لَتُسْـَٔلُنَّ یَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِیْمِ
৪. তারপর সেদিন (দুনিয়ার সব) নিয়ামত সম্বন্ধে অবশ্যই তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে। (সূরা তাকাসুর-১০২: ৮) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন-সূরা আরাফ- ৬, সূরা নাহল-৯৩, সূরা হুজুরাত-১০,১২
তাকওয়া
আল কুরআন
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ حَقَّ تُقٰتِهٖ وَ لَا تَمُوْتُنَّ اِلَّا وَ اَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ
১. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহকে তেমনি ভয় কর, যেমন ভয় করা উচিত। আর মুসলিম অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়। (সূরা আলে ইমরান- ০৩: ১০২)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ لْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ ۚ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ خَبِیْرٌۢ بِمَا تَعْمَلُوْنَ
২. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করে চল! প্রত্যেকের খেয়াল রাখা উচিত যে, সে আগামী দিনের জন্য কী ব্যবস্থা করেছে। আল্লাহকে আরো ভয় করে চল। আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের সব আমলের খবর রাখেন। (সূরা হাশর-৫৯: ১৮)
اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا وَّ الَّذِیْنَ هُمْ مُّحْسِنُوْنَ۠
৩. নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সাথে আছেন, যারা তাকওয়ার জীবনযাপন করে এবং যারা ইহসানের সাথে আমল করে। (সূরা নাহ্ল-১৬: ১২৮)
اِنَّ اَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللّٰهِ اَتْقٰىكُمْ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیْمٌ خَبِیْرٌ
৪. নিশ্চয়ই আল্লাহ্র নিকট তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি অধিক সম্মানিত, যিনি তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব কিছু জানেন এবং সব বিষয়ে অবহিত। (সূরা আল হুজুরাত ৪৯:১৩)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ كُوْنُوْا مَعَ الصّٰدِقِیْنَ
৫. হে ঈমানদার লোকেরা! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদী লোকদের সঙ্গী হও। (সূরা আত তাওবা ৯:১১৯) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন, সূরা বাকারা-১২৩,১৮৯,১৯৭, সূরা আলে ইমরান-২০০, সূরা নিসা-১,৭৭, সূরা মায়েদা-২,৪,৭, সূরা আনয়াম-১৫৫, সূরা তাওবা-১১৯, সূরা ম’মিনূন-৫২, সূরা নূর-৫২, সূরা শূয়ারা-১১০, সূরা আহযাব-১,৭০, সূরা হুজুরাত-১,১৩, সূরা হাদীদ-২৮, সূরা মোজাদালাহ-৯, সূরা হাশর-৭, সূরা তাগাবুন-১৬, সূরা তালাক-২,৪,৫, সূরা মুলক-১২
· হাদিস
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَا عَائِشَةُ اِيَّاكِ وَمُحَقَّرَاتِ الذُّنُوْبِ فَاِنَّ لَهَا مِنَ اللهِ طَالِبًا ـ (اَلسِّلْسِلَةُ الصَّحِيْحَةُ لِلْاَلْبَانِىْ)
১. হযরত আয়েশা ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ তাকে বলেছেন, হে আয়েশা ছোট-খাট গুনাহর ব্যাপারেও সতর্ক হও, কেননা এর জন্যও আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে। (সিলসিলাতুস সহীহা লিল আলবানী, ২৭৩১)
عَنْ عَطِيَّةَ السَّعْدِىْ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَبْلُغُ الْعَبْدُ أَنْ يَّـكُوْنَ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ حَتّٰى يَدَعَ مَا لَا بَأْسَ بِه حَذَرًا لِمَا بِهِ الْبَـأْسُ ـ (تِرْمِذِىْ: بَابُ مَا جَاءَ فِى صِفَةِ أَوَانِى الْحَوْضِ)
২. হযরত আতিয়া আসআ’দী ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, কোন বান্দাহ ততক্ষণ পর্যন্ত মুত্তাকি হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে গুনাহের আশঙ্কায় গুনাহ নেই এমন কাজও ছেড়ে দেবে। (তিরমিযী : বাবু মা জা আ ফি সিফাতি আওয়ানিল হাউদ, ২৩৭৫)
পর্দা
· আল কুরআন
قُلْ لِّلْمُؤْمِنِیْنَ یَغُضُّوْا مِنْ اَبْصَارِهِمْ وَ یَحْفَظُوْا فُرُوْجَهُمْ ؕ ذٰلِكَ اَزْكٰی لَهُمْ ؕ اِنَّ اللّٰهَ خَبِیْرٌۢ بِمَا یَصْنَعُوْنَ
১. (হে নবী!) মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন নিজেদের চোখ নিচু রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য বেশি পবিত্র নিয়ম। তারা যা কিছু করে আল্লাহ এর খবর রাখেন। (সূরা নূর-২৪: ৩০)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُیُوْتًا غَیْرَ بُیُوْتِكُمْ حَتّٰی تَسْتَاْنِسُوْا وَ تُسَلِّمُوْا عَلٰۤی اَهْلِهَا ؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَ
২. হে ঐসব লোক যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের ঘর ছাড়া অন্যদের ঘরে তাদের অনুমতি ছাড়া এবং তাদেরকে সালাম পাঠানো ছাড়া কখনও ঢুকবে না। এ নিয়ম তোমাদের জন্যই ভালো। আশা করা যায় যে, তোমরা এ বিষয়ে খেয়াল রাখবে। (সূরা নূর-২৪: ২৭)
وَ اِذَا بَلَغَ الْاَطْفَالُ مِنْكُمُ الْحُلُمَ فَلْیَسْتَاْذِنُوْا كَمَا اسْتَاْذَنَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ ؕ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللّٰهُ لَكُمْ اٰیٰتِهٖ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ
৩. যখন তোমাদের সন্তানরা সাবালক হয়ে যায় তখন তারা অবশ্যই যেন তেমনিভাবে অনুমতি নিয়ে আসে, যেমনিভাবে তাদের বড়রা অনুমতি নিয়ে এসে থাকে। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতগুলো তোমাদের সামনে স্পষ্ট করে দেন। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও মহাকুশলী। (সূরা নূর-২৪: ৫৯)
وَٱلَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ○
৪. আর যারা (সফল মু’মিনদের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা) নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। (সূরা মুমিনূন-২৩: ৫)
یٰبَنِیْۤ اٰدَمَ قَدْ اَنْزَلْنَا عَلَیْكُمْ لِبَاسًا یُّوَارِیْ سَوْاٰتِكُمْ وَ رِیْشًا ؕ وَ لِبَاسُ التَّقْوٰی ۙ ذٰلِكَ خَیْرٌ ؕ ذٰلِكَ مِنْ اٰیٰتِ اللّٰهِ لَعَلَّهُمْ یَذَّكَّرُوْنَ
৫. হে আদম সন্তান! আমি তোমাদের প্রতি পোশাক নাজিল করেছি, যাতে তোমাদের শরীরের লজ্জাস্থান ঢাকা যায় এবং শরীরের হেফাযত ও সাজ-সজ্জা হয়। আর তাকওয়ার পোশাকই সবচেয়ে ভালো। এটা আল্লাহর নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম নিদর্শন। হয়তো লোকেরা এ থেকে উপদেশ নেবে। (সূরা আ’রাফ-০৭: ২৬) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা বাকারা-২২১. সূরা নিসা-২৩,২৫, সূরা ম’মিনূন-৫, সূরা নূর- ১৯,৩১,৫৮,৬০. সূরা আহযাব-৩২-৩৩,৫৩,৫৯,
· হাদিস
عَنْ جَرِيْرٍ قَالَ سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ نَظْرَةِ الْفُجَأَةِ فَقَالَ اِصْرِفْ بَصَرَكَ ـ (اَبُوْ دَاودَ: بَابُ مَا يَؤُمَرُ بِه مِنْ غَضِّ الْبَصَرِ)
১. হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম, হঠাৎ যদি কোন মহিলার উপর দৃষ্টি পড়ে তাহলে কী করতে হবে? তিনি আমাকে বললেন (কাল বিলম্ব না করেই) তুমি তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিবে। (আবু দাউদ: বাবু মা ইউমার বিহি মিন গাচ্ছিল বাছার, ১৮৩৬)
عَنْ عَلِـىٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ لِـىْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تُتْبِـعِ النَّظْرَ النَّظْرَ فَاِنَّ الْاُوْلٰى لَكَ وَلَيْسَتْ لَكَ الْاَخِيْرَةُ ـ (اَحْمَدْ: مُسْنَدِ عَلِـىٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ)
২. হযরত আলী ” হতে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন, (অপরিচিত নারীর প্রতি) একবার দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার দৃষ্টি নিক্ষেপ করো না। কেননা প্রথম দৃষ্টি তোমার, পরবর্তী দৃষ্টি তোমার নয়। (মুসনাদে আহমাদ: মুসনাদে আলী (রা), ১২৯৮)
عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَلْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ فَاِذَا خَرَجَتْ اِسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ـ (تِرْمِذِىْ: بَابُ مَا جَاءَ فِىْ كَرَاهِيَةِ الدُّخُوْلِ عَلَى الْمُغِيْبَاتِ)
৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, মহিলারা হলো পর্দায় থাকার বস্তু। যখন সে (পর্দা উপেক্ষা করে) বাহিরে আসে তখন শয়তান তাকে সুসজ্জিত করে দেখায়। (তিরমিযী: বাবু মা জা’আফি কারাহিয়াতিদ দুখুলি আলাল মুগিবাতি, ১০৯৩)
বাইয়াত
· আল-কুরআন
اِنَّ الَّذِیْنَ یُبَایِعُوْنَكَ اِنَّمَا یُبَایِعُوْنَ اللّٰهَ ؕ یَدُ اللّٰهِ فَوْقَ اَیْدِیْهِمْ ۚ فَمَنْ نَّكَثَ فَاِنَّمَا یَنْكُثُ عَلٰی نَفْسِهٖ ۚ وَ مَنْ اَوْفٰی بِمَا عٰهَدَ عَلَیْهُ اللّٰهَ فَسَیُؤْتِیْهِ اَجْرًا عَظِیْمًا۠
১. (হে রাসূল!) যারা আপনার হাতে বাইয়াত করছিল তারা (আসলে) আল্লাহর কাছে বাইয়াত করছিল, তাদের হাতের উপর আল্লাহর হাত ছিল। এখন যে এ ওয়াদা ভঙ্গ করবে এর কুফল তার উপরই পড়বে। আর আল্লাহর সাথে ওয়াদা করে যে তা পূরণ করবে, আল্লাহ শিগগিরই তাকে বড় পুরস্কার দেবেন। (সূরা ফাত্হ-৪৮: ১০)
لَقَدْ رَضِیَ اللّٰهُ عَنِ الْمُؤْمِنِیْنَ اِذْ یُبَایِعُوْنَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِیْ قُلُوْبِهِمْ فَاَنْزَلَ السَّكِیْنَةَ عَلَیْهِمْ وَ اَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِیْبًاۙ
২. (হে রাসূল!) আল্লাহ তায়ালা মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলেন, যখন তাকে গাছের তলায় আপনার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করছিল। তাদের মনের অবস্থা তাঁর জানা ছিল। তাই তিনি তাদের উপর সান্ত¡না নাজিল করলেন এবং পুরস্কার হিসেবে নিকটবর্তী বিজয় দান করলেন। (সূরা ফাত্হ-৪৮: ১৮)
اِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰی مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اَنْفُسَهُمْ وَ اَمْوَالَهُمْ بِاَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ؕ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ فَیَقْتُلُوْنَ وَ یُقْتَلُوْنَ ۫ وَعْدًا عَلَیْهِ حَقًّا فِی التَّوْرٰىةِ وَ الْاِنْجِیْلِ وَ الْقُرْاٰنِ ؕ وَ مَنْ اَوْفٰی بِعَهْدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسْتَبْشِرُوْا بِبَیْعِكُمُ الَّذِیْ بَایَعْتُمْ بِهٖ ؕ وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ
৩. (আসলে ব্যাপার হলো) আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জান ও মাল বেহেশতের বদলে কিনে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে, (দুশমনকে) মারে এবং (নিজেরাও) নিহত হয়। তাদেরকে (বেহেশত দেওয়ার ওয়াদা) আল্লাহর দায়িত্ব একটি মজবুত ওয়াদা-যা তাওরাত, ইনজিল ও কুরআনে (করা হয়েছে)। ওয়াদা পালনে আল্লাহর চেয়ে বেশি যোগ্য আর কে আছে? সুতরাং তোমরা আল্লাহর সাথে যে বেচাকেনার কারবার করেছ, সে বিষয়ে খুশি হয়ে যাও। এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা। (সূরা তাওবা-০৯: ১১১)
قُلْ اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَ مَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَۙ
৪. আপনি বলুন! আমার নামায, আমার কোরবানি এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ্রই জন্য। (সূরা আল আন‘আম ৬:১৬২)
بَلٰی مَنْ اَوْفٰی بِعَهْدِهٖ وَ اتَّقٰی فَاِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الْمُتَّقِیْنَ
৫. আর যে ব্যক্তি তার ওয়াদা (প্রতিশ্রুতি) পূর্ণ করবে এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করবে (সে আল্লাহ তা‘আলার প্রিয়ভাজন হবে)। আর নিশ্চিতভাবে আল্লাহ পাক মুত্তাকিদের ভালবাসেন। (সূরা আলে ইমরান-৩:৭৬) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন, আলে ইমরান- ৭৭, সূরা নিসা- ৭৪, সূরা তাওবা ১১১, সূরা মুমতাহিন- ১২, সূরা নাহল- ৯১,
· হাদিস
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَنْ خَلَعَ يَدًا مِنْ طَاعَةٍ لَقِىَ اللهَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَا حُجَّةَ لَه وَمَنْ مَاتَ وَلَيْسَ فِىْ عُنُقِهِ بَيْعَةٌ مَاتَ مِيْتَةً جَاهِلِيَّةً ـ (مُسْلِمْ: بَابُ وُجُوْبِ مُلَازَمَةِ جَمَاعَةِ الْمُسْلِمِيْنَ)
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ” বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আনুগত্য থেকে তার হাতকে খুলে ফেলল, কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে এমনভাবে যে তার বলার কিছু থাকবে না, আর যে ব্যক্তি বাইয়াতের বন্ধন ছাড়াই মারা গেল সে জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ করল। (মুসলিম: বাবু উজুবি মুলাযামাতি জামায়াতিল মুসলিমিন: ৩৪৪১)
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنَّا اِذَا بَايَعَنَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ يَقُوْلُ لَنَا فِيْمَا اسْتَطَعْتُمْ ـ (بُخَارِىْ: بَابُ كَيْفَ يُبَايِـعُ الْاِمَامُ النَّاسَ)
২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করতাম শ্রবণ ও আনুগত্যের উপর। আর তিনি আমাদেরকে সামর্থ্য অনুযায়ী উক্ত আমল করতে বলতেন। (বুখারী: বাবু কাইফা ইউবায়িউল ইমামুন নাসা, ৬৬৬২)
তাওবা
আল-কুরআন
اَفَلَا یَتُوْبُوْنَ اِلَی اللهِ وَیَسْتَغْفِرُوْنَهٗ ؕ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
১. তবে কি তারা আল্লাহর নিকট তাওবা করবে না এবং তাঁর কাছে মাফ চাইবে না? আল্লাহ তো বড়াই ক্ষমাশীল ও মেহেরবান। (সূরা মায়িদা-০৫: ৭৪)
وَالَّذِیْنَ عَمِلُوا السَّیِّاٰتِ ثُمَّ تَابُوْا مِنْۢ بَعْدِهَا وَ اٰمَنُوْۤا ۫ اِنَّ رَبَّکَ مِنْۢ بَعْدِهَا لَغَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
২. যারা বদ আমল করে, তারপর তাওবা করে ও ঈমান আনে; নিশ্চয়ই আপনার রব তাওবা ও ঈমানের পর বড়ই ক্ষমাশীল ও মেহেরবান। (সূরা আ’রাফ-০৭: ১৫৩)
فَمَنْ تَابَ مِنْۢ بَعْدِ ظُلْمِهٖ وَاَصْلَحَ فَاِنَّ اللهَ یَتُوْبُ عَلَیْهِ ؕ اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
৩. অতঃপর যে জুলুম করার পর তাওবা করে এবং নিজকে সংশোধন করে নেয় নিশ্চয়ই আল্লাহ তার তাওবা কবুল করবেন। আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও মেহেরবান। (সূরা মায়িদা: ০৫: ৩৯) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা আলে ইমরান -১৩৫, সূরা নিসা -১৭,১৮, সূরা নুর-৩১, সূরা শু’রা -৪২,
· হাদিস
عَنْ اِبْنِ عُمَرَ عَنْ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِنَّ اللهَ يَقْبَلُ تَوْبَةَ الْعَبْدِ مَا لَمْ يُغَرْغِرْ ـ (تِرْمِذِىْ : بَابُ فِىْ فَضْلِ التَّوْبَةِ وَ الْاِسْتِغْفَارِ)
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ” নবী করীম সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা মৃত্যুও যন্ত্রণা শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাঁর বান্দার তাওবা কবুল করেন। (তিরমিযী: বাবু ফি ফাদলিত তাওবাতি ওয়াল ইস্তেগফারি, ৩৪৬০)
عَنْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللهُ اَفْرَحُ بِتَوْبَةِ عَبْدِه مِنْ أَحَدِكُمْ سَقَطَ عَلٰى بَعِيْرِه وَعَدْ أَضْلَّهٗ فِىْ أَرْضٍ فُلَاةٍ ـ (بُخَارِى: بَابُ التَّوْبَةِ)
২. হযরত আনাস ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আল্লাহ তাঁর বান্দাহর তাওবায় তোমাদের ঐ ব্যক্তির চেয়েও বেশি আনন্দিত হন, যার উট মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়ার পর সে তা ফিরে পেল। (বুখারী বাবুত তাওবাতি, ৫৮৩৪)
মুমিনদের গুণাবলি
আল কুরআন
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّـهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ ﴿٢﴾ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ ﴿٣﴾ أُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَّهُمْ دَرَجَاتٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ ﴿٤﴾
১. সাচ্চা ঈমানদার তো ঐসব লোক, যাদের দিল আল্লাহর কথা শুনলে কেঁপে ওঠে, যখন তাদের সামনে আল্লাহর আয়াত তিলাওয়াত করা হয় তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা তাদের রবের উপর ভরসা রাখে, যারা নামাজ কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে (আমার পথে) খরচ করে। এরাই ঐসব লোক, যারা সত্যিকার মুমিন। তাদের জন্য তাদের রবের কাছে বড় মর্যাদা, গুনাহের ক্ষমা ও উত্তম রিজিক আছে। (সূরা আনফাল, ০৮: ২-৪)
الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿١٦﴾ الصَّابِرِينَ وَالصَّادِقِينَ وَالْقَانِتِينَ وَالْمُنفِقِينَ وَالْمُسْتَغْفِرِينَ بِالْأَسْحَارِ ﴿١٧﴾
২. তারা ঐসব লোক, যারা বলে: হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, আমাদের গুনাহ্ মাফ কর এবং আমাদেরকে আগুনের আজাব থেকে বাঁচাও। এসব লোক ধৈর্যশীল, সত্যপন্থী, অনুগত, দানশীল ও শেষরাতে আল্লাহর কাছে গুণাহ মাফ চায়। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ১৬-১৭)
اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ اِخْوَةٌ فَاَصْلِحُوْا بَیْنَ اَخَوَیْكُمْ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ۠
৩. মু’মিনরা তো একে অপরের ভাই। তাই তোমাদের ভাইদের মধ্যে সুসম্পর্ক বহাল করে দাও। আল্লাহকে ভয় কর। আশা করা যায়, তোমাদের উপর দয়া করা হবে। (সূরা হুজুরাত: ৪৯: ১০)
اِنْ یَّنْصُرْكُمُ اللّٰهُ فَلَا غَالِبَ لَكُمْ ۚ وَ اِنْ یَّخْذُلْكُمْ فَمَنْ ذَا الَّذِیْ یَنْصُرُكُمْ مِّنْۢ بَعْدِهٖ ؕ وَ عَلَی اللّٰهِ فَلْیَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ
৪. আল্লাহ যদি তোমাদেরকে সাহায্য করেন তাহলে কোন শক্তি তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না। আর তিনিই যদি তোমাদেরকে ত্যাগ করেন, তাহলে তাঁর পরে আর কে আছে, যে তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে। কাজেই যারা সাচ্চা মুমিন তাদেরকে আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত। (সূরা আলে ইমরান: ০৩ঃ১৬০)
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ ﴿١﴾ الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ ﴿٢﴾ وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ ﴿٣﴾ وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ ﴿٤﴾ وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ ﴿٥﴾
৫. অবশ্যই মুমিনরা সফলকাম হয়েছে। যার তাদের নামাজে বিনয়ী ও ভীত থাকে। যারা বেহুদা কাজ থেকে দূরে থাকে। যারা যাকাতের ব্যাপারে কর্মতৎপর হয়। যারা তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। (সূরা মু’মিনূন ২৩:১-৫) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন- সূরা বাকারা-২৫৭, সূরা নিসা-৬৭, সূরা মায়েদা-৫১, সূরা তাওবা-১১১, ১১২, ১২২, সূরা রা’দ-২৮, সূরা ইব্রাহিম-২৭, সূরা নাহল-৯৭, সূরা মারইয়াম-৯৬, সূরা হাজ-৩৫, সূরা নূর-৫১,৫২,৫৫,৫২, সূরা ফুরকান-৬৩-৭৪, সূরা আনকাবুত-৭, সূরা রোম-৪৭, সূরা লোকমান-৩-৫,৮,৯,১৭-১৯, সূরা আহযাব-৩৫,৪৭, সূরা শূ-রা-৩৭-৩৯, সূরা হুজুরাত-৭,১০,১৫,
· হাদিস
عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيْرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُسْلِمُوْنَ كَرَجُلٍ وَاحِدٍ اِنِ اشْتَكٰى عَيْنُه اِشْتَكٰى كُـلُّه وَاِنِ اشْتَكٰى رَأْسُه اِشْتَكٰى كُـلُّه ـ (مُسْلِمٌ: بَابُ تَرَاحُمِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَتَعَاطُفِهِمْ)
১. হযরত নুমান ইবনে বাশির ” হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাঃ বলেছেন, সকল মুসলমান একই ব্যক্তি সত্তার মত। যখন তার চোখে যন্ত্রণা হয়, তখন তার গোটা শরীরই তা অনুভব করে। যদি তার মাথা ব্যথা হয়, তখনও গোটা শরীরই তা অনুভব করে। (মুসলিম: বাবু তারাহুমিল মুমিনীনা ওয়া তায়াতুফি হিম, ৪৬৮৭)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَلْمُؤْمِنُ مَألَفٌ وَلَا خَيْرَ فِيْمَنْ لَا يَأْلَفُ، وَلَا يُؤَلَفُ ـ (مِشْكَـاةُ الْمَصَابِيْحِ ـ بَابُ السَّلَامِ)
২. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। রাসূলূল্লাহ সাঃ বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি ভালোবাসা ও দয়ার প্রতীক। ঐ ব্যক্তির মধ্যে কোন কল্যাণ নেই, যে কাউকে ভালোবাসে না এবং কারো ভালোবাসা পায় না। (মিশকাতুল মাসাবীহ: বাবুস সালাম, ৪৯৯৫)
ত্যাগ-কোরবানি
· আল কুরআন
وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّشْرِیْ نَفْسَهُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ رَءُوْفٌۢ بِالْعِبَادِ
১. (অপর দিকে) মানুষের মধ্যে কেউ এমনও আছে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের জীবন দিয়ে দেয় এবং এমন বান্দাদের উপর আল্লাহ বড়ই মেহেরবান। (সূরা বাকারা-০২: ২০৭)
اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَ لَمَّا یَعْلَمِ اللّٰهُ الَّذِیْنَ جٰهَدُوْا مِنْكُمْ وَ یَعْلَمَ الصّٰبِرِیْنَ
২. তোমরা কি মনে করেছ, তোমরা এমনিই বেহেশতে চলে যাবে? অথচ আল্লাহ এখনো দেখে নেননি যে, তোমাদের মধ্যে এমন কারা আছে, যারা তাঁর পথে জিহাদ করে এবং (তাঁরই খাতিরে) সবর করতে পারে। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ১৪২)
وَ لَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَ الْجُوْعِ وَ نَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَ الْاَنْفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَۙ
৩. আমি অবশ্যই ভয়, বিপদ, ক্ষুধা, জান ও মালের ক্ষতি এবং আয় কমিয়ে দিয়ে তোমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলব। এসব অবস্থায় যারা সবর করে তাদেরকে সুখবর দাও। (সূরা বাকারা-০২: ১৫৫)
أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ ﴿٢﴾ وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۖ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّـهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ
৪. মানুষ কি মনে করে যে, আমরা ঈমান এনেছি শুধু এটুকু কথা বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর তাদেরকে কোনো পরীক্ষা করা হবে না। অথচ তাদের আগে যারা ছিল তাদের সবাইকে আমি পরীক্ষা করেছি। আল্লাহকে তো অবশ্যই দেখে নিতে হবে যে, (ঈমান এনেছি বলার মধ্যে) কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যুক। (সূরা আনকাবুত-২৯: ২-৩)
مَاۤ اَصَابَ مِنْ مُّصِیْبَةٍ اِلَّا بِاِذْنِ اللّٰهِ ؕ وَ مَنْ یُّؤْمِنْۢ بِاللّٰهِ یَهْدِ قَلْبَهٗ ؕ وَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ
৫. কোন মুসিবত কখনো আল্লাহর অনুমতি ছাড়া আসে না। যে আল্লাহর উপর ঈমান রাখে আল্লাহ তার অন্তরকে হেদায়াত দান করেন। আর আল্লাহ সব বিষয়ে জানেন। (সূরা তাগাবুন-৬৪: ১১)
· হাদিস
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْتِى عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ الصَّابِرُ فِيْهِمْ عَلٰى دِيْنِه كَالْقَابِضِ عَلَى الْجَمْرِ ـ (تِرْمِذِى: بَابُ مَا جَاءَ فِى النَّهْىِ عَنْ سَبِّ الرِّيَاحِ)
১. হযরত আনাস ইবনে মালেক ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, মানুষের উপর এমন এক যুগ আসবে, যখন দ্বীনদারের জন্য দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা জ্বলন্ত অঙ্গার হাতে রাখার মত কঠিন হবে। (তিরমিযী: বাবু মা জা.আ আন সাব্বির রিয়াহী, ২১৮৬)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلدُّنْيَا سِجْنُ الْمُؤْمِنِ وَجَنَّةُ الْكَافِرِ.
২. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, দুনিয়াটা হলো ঈমানদারদের জন্য কারাগার এবং কাফেরদের জন্য বেহেশত। (মুসলিম)
ইসলামী অর্থব্যবস্থা
· আল-কুরআন
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَاْكُلُوْۤا اَمْوَالَكُمْ بَیْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنْ تَكُوْنَ تِجَارَةً عَنْ تَرَاضٍ مِّنْكُمْ ۫ وَ لَا تَقْتُلُوْۤا اَنْفُسَكُمْ ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِكُمْ رَحِیْمًا
১. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ! তোমরা একে অপরের মাল অন্যায়ভাবে খেয়ো না। সন্তুষ্টচিত্তে লেনদেন করা উচিত। তোমরা নিজেরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয়ই জানবে, আল্লাহ তোমাদের উপর মেহেরবান। (সূরা নিসা-০৪: ২৯)
وَ لَا تَاْكُلُوْۤا اَمْوَالَكُمْ بَیْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَ تُدْلُوْا بِهَاۤ اِلَی الْحُكَّامِ لِتَاْكُلُوْا فَرِیْقًا مِّنْ اَمْوَالِ النَّاسِ بِالْاِثْمِ وَ اَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ۠
২. তোমরা একে অপরের মাল বেআইনিভাবে খেয়ো না এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের মালের অংশ অন্যায়ভাবে দখল করার জন্য বিচারকদের নিকট দাবি পেশ করো না। (সূরা বাকারা-০২: ১৮৮)
وَ فِیْۤ اَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّآىِٕلِ وَ الْمَحْرُوْمِ
৩. এবং তাদের মালের মধ্যে ভিখারি ও বঞ্চিতদের অধিকার ছিল। (সূরা যারিয়াত-৫১: ১৯)
إِنَّ الَّذِينَ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّـهِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَنفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً يَرْجُونَ تِجَارَةً لَّن تَبُورَ ﴿٢٩﴾ لِيُوَفِّيَهُمْ أُجُورَهُمْ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضْلِهِ ۚ إِنَّهُ غَفُورٌ شَكُورٌ ﴿٣٠﴾
৪. যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যা কিছু রিজিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে খরচ করে, নিশ্চয়ই তারা এমন এক ব্যবসায়ের আশা করে, যার মধ্যে কখনো লোকসান হবে না। (এ ব্যবসায়ে তাদের সব কিছু লাগিয়ে দেয়ার কারণ এই যে) যাতে আল্লাহ তাদের বদলা পুরোপুরি তাদেরকে দিয়ে দেন এবং তাঁর মেহেরবানি থেকে আরো বেশি দান করেন। নিশ্চয়ই তিনি গুনাহ মাফ করেন এবং নেক আমলের কদর করেন। (সূরা ফাতির-৩৫: ২৯-৩০)
وَ مَا كَانَ لِنَبِیٍّ اَنْ یَّغُلَّ ؕ وَ مَنْ یَّغْلُلْ یَاْتِ بِمَا غَلَّ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ۚ ثُمَّ تُوَفّٰی كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ
৫. খিয়ানত করা কোনো নবীর কাজ হতে পারে না। আর যে খিয়ানত করে সে কিয়ামতের দিন তার খিয়ানতসহ হাজির হয়ে যাবে। তারপর প্রত্যেক লোকই তার কামাইয়ের পুরা বদলা পাবে এবং কারো উপর কোনো জুলুম করা হবে না। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ১৬১)
· হাদিস
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيْضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيْضَةِ ـ (بَيْهَقِىْ: شُعَبِ الْاِيْمَانِ، ضَعَّفَهُ الْاَلْبَانِىْ)
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, ফরজ ইবাদাতের পরে হালাল রুজির সন্ধান করাও ফরজ। (বায়হাকী, শোয়াবুল ঈমান ৮৪৮২, আলবানী একে’দয়ীফ’ বলেছেন)
عَنْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَا أَوْلٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ وَمَنْ تَرَكَ مَالًا فَلِأَهْلِه وَمَنْ تَرَكَ دَيْنًا أَوْ ضَيَاعًا فَعَلَـىَّ وَاِلَـىَّ فَأَنَا أَوْلٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ (صَحِيْحُ اِبْنِ حِبَّانٍ: فَصْلٌ فِى الصَّلَاةِ عَلَى الْجَنَازَةِ)
২. হযরত জাবের ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, মুমিনদের জন্য আমার ভালোবাসা তার নিজসত্তার চাইতেও বেশি। যে ব্যক্তি (মৃত্যুবরণের সময়) সম্পদ রেখে গেল, তা তার পরিবার পরিজনের জন্য। আর যে ব্যক্তি ঋণ বা অসহায় সন্তান রেখে গেল তার দায় দায়িত্ব আমার উপর। কেননা মুমিনদের প্রতি আমার ভালোবাসা সবচেয়ে বেশি। (সহীহ ইবনু হিব্বান: ফাসলুন ফিস সালতি আলাল জানাযতি, ৩১২৭)
ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা
· আল কুরআন
اَلَّذِیْنَ اِنْ مَّكَّنّٰهُمْ فِی الْاَرْضِ اَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوةَ وَ اَمَرُوْا بِالْمَعْرُوْفِ وَ نَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ ؕ وَ لِلّٰهِ عَاقِبَةُ الْاُمُوْرِ
১. তারাই ঐসব লোক, যাদেরকে যদি আমি পৃথিবীতে ক্ষমতা দিই, তাহলে তারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত আদায় করে, ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। আর সকল বিষয়ের পরিণাম আল্লাহরই হাতে। (সূরা হাজ-২২: ৪১)
اِنَّاۤ اَنْزَلْنَاۤ اِلَیْكَ الْكِتٰبَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَیْنَ النَّاسِ بِمَاۤ اَرٰىكَ اللّٰهُ ؕ وَ لَا تَكُنْ لِّلْخَآىِٕنِیْنَ خَصِیْمًاۙ
২. হে রাসূল! আমি এ কিতাব হকসহকারে আপনার প্রতি নাজিল করেছি, যাতে আল্লাহ আপনাকে যে সঠিক পথ দেখিয়েছেন, সে অনুযায়ী জনগণের মধ্যে ফয়সালা করেন। আপনি খিয়ানতকারীদের পক্ষ হয়ে ঝগড়া করবেন না। (সূরা নিসা-০৪: ১০৫)
وَ قُلْ رَّبِّ اَدْخِلْنِیْ مُدْخَلَ صِدْقٍ وَّ اَخْرِجْنِیْ مُخْرَجَ صِدْقٍ وَّ اجْعَلْ لِّیْ مِنْ لَّدُنْكَ سُلْطٰنًا نَّصِیْرًا
৩. এবং দোয়া করুন, হে আমার রব! আমাকে যেখানেই নিয়ে যাও, সত্যতার সাথেই নিয়ে যাও এবং যেখান থেকে বের কর সত্যতার সাথেই বের কর। আর তোমার পক্ষ থেকে আমাকে এমন কোনো শক্তি দান কর, যে আমার সাহায্যকারী হবে। (সূরা বনি ইসরাইল- ১৭: ৮০)
اِنَّ رَبَّـكُمُ اللّٰهُ الَّذِیْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ فِیْ سِتَّةِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسْتَوٰی عَلَی الْعَرْشِ ۫ یُغْشِی الَّیْلَ النَّهَارَ یَطْلُبُهٗ حَثِیْثًا ۙ وَّ الشَّمْسَ وَ الْقَمَرَ وَ النُّجُوْمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِاَمْرِهٖ ؕ اَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَ الْاَمْرُ ؕ تَبٰرَكَ اللّٰهُ رَبُّ الْعٰلَمِیْنَ
৪. নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের রব, যিনি আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি আরশে সমাসীন হন। যিনি দিনকে রাত দিয়ে ঢেকে দেন। তারপর দিন রাতের পেছনে দৌড়ে চলে আসে। যিনি সূর্য, চন্দ্র ও তারকা সৃষ্টি করেছেন, যা তাঁর হুকুমের অধীন। সাবধান, সৃষ্টিও তাঁর, হুকুমও তাঁরই। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বড়ই বরকতময়। (সূরা আ’রাফ-০৭: ৫৪)
اَفَحُكْمَ الْجَاهِلِیَّةِ یَبْغُوْنَ ؕ وَ مَنْ اَحْسَنُ مِنَ اللّٰهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ یُّوْقِنُوْنَ۠
৫. (যদি তারা আল্লাহর আইন থেকে মুখ ফিরায়) তাহলে কি তারা আবার জাহিলিয়াতের বিচার-ফয়সালা চায়? অথচ যারা আল্লাহর উপর ইয়াকিন রাখে, তাদের কাছে আল্লাহ থেকে কে বেশি ভালো ফয়সালাকারী হতে পারে? (সূরা মায়িদা-০৫: ৫০)
· হাদিস
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ كَرِهَ مِنْ أَمِيْرِهِ شَيْئًا فَلْيَصْبِرْ فَاِنَّه مَنْ خَرَجَ مِنَ السُّلْطَانِ شِبْرًا مَاتَ مَيْتَةً جَاهِلِيَّةً ـ (بُخَارِىْ: بَابُ قَوْلِ النَّبِىِّ سَتَرَوْنَ بَعْدِىْ أُمُوْرًا تُنْكِرُوْنَه)
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ” নবী করিম সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তার নেতার মাঝে এমন কিছু দেখে যা অপছন্দনীয় সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। সুতরাং যে ব্যক্তি নেতার আনুগত্য থেকে সামান্যতমও দূরে গেল, সে জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ করল। (বুখারী: বাবু ক্বাওলিন নাবিয়্য সাতারাওনা বা’দি উমুরান তুনকিরুনাহু, ৬৫৩০)
عَنْ أَبِىْ مُوْسَى الْاَشْعَرِىِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ مِنْ اِجْلَالِ اللهِ اِكْرَامَ ذِى الشَّيْبَةِ الْمُسْلِمِ وَحَامِلِ الْقُرْاٰنِ غَيْرَ الْغَالِىْ فِيْهِ وَالْجَافِىْ عَنْهُ وَاِكْرَامَ ذِى السُّلْطَانِ الْمُقْسِطِ ـ (اَبُوْ دَاؤدَ: بَابُ فِى تَنْزِيْلِ النَّاسِ مَنَازِلَهُمْ)
২. হযরত আবু মুসা আশয়ারী ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, বৃদ্ধ মুসলিমকে সম্মান করা, আল-কুরআনের বাহক যদি তাতে অতিরঞ্জিত কিছু না করে তাকে সম্মান করা এবং ন্যায়পরায়ণ শাসককে সম্মান করা আল্লাহকে সম্মান করার অন্তর্ভুক্ত। (আবু দাউদ: বাবুন তানজিলিন্নাসি মানজিলাহুম, ৪২০৩)
عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ ثَلَاثٌ اَخَافُ عَلٰى أُمَّتِىْ اَلْاِسْتِسْقَاءُ بِالْأَنْوَاءِ وَحَيْفُ السُّلْطَانِ وَتَـكْذِيْبٌ بِالْقَدْرِ ـ (اَحْمَدُ : حَدِيْثُ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ)
৩. হযরত জাবের ইবনে সামুরা ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি, আমি আমার উম্মতের ব্যাপারে তিনটি বিষয়ের আশঙ্কা করি ১. তারকারাজির মাধ্যমে বৃষ্টি প্রার্থনা করা ২. শাসকদের পক্ষ থেকে অত্যাচার ৩. তাকদিরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। (আহ্মাদ: হাদিস জাবের ইবনে সামুরাতা, ১৯১৬)
আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয়
· আল-কুরআন
لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتّٰی تُنْفِقُوْا مِمَّا تُحِبُّوْنَ ؕ۬ وَ مَا تُنْفِقُوْا مِنْ شَیْءٍ فَاِنَّ اللّٰهَ بِهٖ عَلِیْمٌক্স
১. তোমাদের ঐসব জিনিস, যা তোমরা ভালোবাস তা (আল্লাহর পথে) খরচ না করা পর্যন্ত তোমরা নেকি হাসিল করতে পার না। আর তোমরা যা কিছু খরচ করবে তা আল্লাহর অজানা থাকবে না। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ৯২)
اَلَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ثُمَّ لَا یُتْبِعُوْنَ مَاۤ اَنْفَقُوْا مَنًّا وَّ لَاۤ اَذًی ۙ لَّهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ۚ وَ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ
২. যারা তাদের মাল আল্লাহর পথে খরচ করে এবং এরপর তা বলে বেড়ায় না ও কষ্ট দেয় না, তাদের পুরস্কার তাদের রবের কাছে রয়েছে। তাদের কোন চিন্তা ও ভয়ের কারণ নেই। (সূরা বাকারা-০২: ২৬২)
وَ اَنْفِقُوْا مِنْ مَّا رَزَقْنٰكُمْ مِّنْ قَبْلِ اَنْ یَّاْتِیَ اَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَیَقُوْلَ رَبِّ لَوْ لَاۤ اَخَّرْتَنِیْۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیْبٍ ۙ فَاَصَّدَّقَ وَ اَكُنْ مِّنَ الصّٰلِحِیْنَ- وَ لَنْ یُّؤَخِّرَ اللّٰهُ نَفْسًا اِذَا جَآءَ اَجَلُهَا ؕ وَ اللّٰهُ خَبِیْرٌۢ بِمَا تَعْمَلُوْنَ۠
৩. আমি তোমাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি, তোমাদের কারো মৃত্যু আসার আগেই তা থেকে তোমরা খরচ কর। মৃত্যুর সময় সে বলে, হে আমার রব! আমাকে কেন আরেকটু সময় দিলে না, তাহলে আমি দান করতাম ও নেক লোকদের মধ্যে শামিল হতাম। অথচ যখন কারো (কাজ করার) সময় পূর্ণ হয়ে যায় তখন আল্লাহ এর খবর রাখেন। (সূরা মুনাফিকুন: ৬৩: ১০-১১)
الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ فِی السَّرَّآءِ وَ الضَّرَّآءِ وَ الْكٰظِمِیْنَ الْغَیْظَ وَ الْعَافِیْنَ عَنِ النَّاسِ ؕ وَ اللّٰهُ یُحِبُّ الْمُحْسِنِیْنَۚ
৪. যারা সব অবস্থায়ই নিজেদের মাল খরচ করে খারাপ অবস্থাই থাকুক আর ভালো অবস্থাই থাকুক; যারা রাগকে দমন করে এবং অপরের দোষ মাফ করে দেয়; এমন নেক লোক আল্লাহ খুব পছন্দ করেন। (সূরা আলে ইমরান-০৩: ১৩৪)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْفِقُوْا مِمَّا رَزَقْنٰكُمْ مِّنْ قَبْلِ اَنْ یَّاْتِیَ یَوْمٌ لَّا بَیْعٌ فِیْهِ وَ لَا خُلَّةٌ وَّ لَا شَفَاعَةٌ ؕ وَ الْكٰفِرُوْنَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ
৫. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ! আমি তোমাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে খরচ কর, ঐ দিনটি আসার আগে, যেদিন কোনো কেনাবেচা হবে না, কোনো বন্ধুত্ব কাজে আসবে না এবং কোনো সুপারিশ চলবে না। আসলে তারাই জালিম, যারা কুফরির নীতি গ্রহণ করে। (সূরা বাকারা-০২:২৫৪) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা বাকারা-১৯৫, ২৪৫, ২৬১, ২৭২, সূরা আলে ইমরান-১৩৪, ৩৬,৬০, সূরা তাওবা- ৩৩-৩৪, ৫৪, ১২১, সূরা ইব্রাহিম-৩১, সূরা মোহাম্মদ-৩৮, সূরা হাদিদ-১০,১১, সূরা মুনাফিকুন -১০-১১,
· হাদিস
عَنْ خُرَيْمِ بْنِ فَاتِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَنْفَقَ نَفَقَةً فِىْ سَبِيْلِ اللهِ كُتِبَتْ لَه بِسَبْعِ مِأَةِ ضِعْفٍ ـ (تِرْمِذِىْ: بَابُ مَاجَاءَ فِىْ فَضْلِ النَّفَقَةِ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ)
১. হযরত খুরাইম ইবনে ফাতেক ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে আল্লাহ তায়ালার পথে একটি জিনিস দান করল, তার জন্য সাতশত গুণ সওয়াব লেখা হবে। (তিরমিযী : বাবু মা জা আ ফি ফাদলিন নাফাকাতি ফি সাবিলিল্লাহি, ১৫৫০)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ اللهُ أَنْفِقْ يَا ابْنَ اٰدَمَ اُنْفِقْ عَلَيْكَ ـ (بُخَارِىْ: بَابُ فَضْلِ النَّفَقَةِ عَلَى الْأَهْلِ)
২. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি দান করতে থাক, আমিও তোমাকে দান করব। (বুখারী : বাবু ফাদলিন নাফাকাতি আলাল আহলি ৪৯৩৩)
জান্নাত
· আল কুরআন
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنّٰتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًاۙ۱۰۷ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا لَا یَبْغُوْنَ عَنْهَا حِوَلًا
১. নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তাদের মেহমানদারির জন্য ফিরদাউস নামক বেহেশত রয়েছে, যেখানে তারা চিরদিন থাকবে এবং সেখান থেকে অন্য কোথাও তারা যেতে চাইবে না। (সূরা কাহফ-১৮:১০৭, ১০৮)
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَهُمْ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِھَا الْاَنْھٰرُ ذٰلِکَ الْفَوْزُ الْکَبِیْرُ
২. যারা ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে, নিশ্চয়ই তাদের জন্য রয়েছে বেহেশতের বাগান, যার নিচে ঝরনাধারা প্রবাহিত হতে থাকবে-এটা বিরাট সফলতা।(সূরা বুরুজ-৮৫:১১)
وَسِیْقَ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ اِلَی الْجَنَّۃِ زُمَرًا ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءُوْهَا وَ فُتِحَتْ اَبْوَابُهَا وَ قَالَ لَهُمْ خَزَنَتُهَا سَلٰمٌ عَلَیْكُمْ طِبْتُمْ فَادْخُلُوْهَا خٰلِدِیْنَ
৩. আর যারা তাদের রবকে ভয় করত তাদেরকেও দলে দলে বেহেশতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। তারা যখন সেখানে পৌঁছবে তখন (দেখা যাবে যে,) বেহেশতের দরজাগুলো আগে থেকেই খুলে রাখা হয়েছে। বেহেশতের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, তোমাদের প্রতি সালাম। তোমরা খুব ভালো অবস্থায় ছিলে। বেহেশতে চিরদিনের জন্য এসে যাও। (সূরা যুমার-৩৯ঃ৭৩) বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা বাকারা-২৫, সূরা আলে ইমরান-১৩৩, ১৮৫, সূরা তাওবা-৭২, সূরা নাহল-৩২, সূরা ইয়াছিন-৫৫-৫৮, সূরা মোহাম্মদ-১৫, সূরা হাশর-২০, সূরা দাহর-১৩,২০,
· হাদিস
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِطَّلَعْتُ فِىْ الْجَنَّةِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا الْفُقَرَاءَ وَاطَّلَعْتُ فِىْ النَّارِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ ـ (بُخَارِىْ : بَابُ مَا جَاءَ فِىْ صِفَةِ الْجَنَّةِ)
১. হযরত ইমরান ইবনে হোসাইন ” নবী করীম সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি জান্নাতে উঁকি দিয়ে দেখেছি, তার অধিকাংশ অধিবাসীই দরিদ্র। আর জাহান্নামে উঁকি দিয়ে দেখেছি তার অধিকাংশ মহিলা। (বুখারী)
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ اَلسَّاعِدِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَوْضِعُ سَوْطٍ فِىْ الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنْ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا ـ (بُخَارِىْ: بَابُ مَا جَاءَ فِىْ صِفَةِ الْجَنَّةِ)
২. হযরত সাহল ইবনে সা’দ সায়েদী ” থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, একটি চাবুক রাখার পরিমাণ সম জান্নাতের মর্যাদা গোটা পৃথিবী এবং তার মাঝে যা রয়েছে, তার চাইতেও উত্তম (বুখারী)
জাহান্নাম
· আল-কুরআন
فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا وَلَنْ تَفْعَلُوْا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِیْ وَقُوْدُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَۃُ ۚۖ اُعِدَّتْ لِلْکٰفِرِیْنَ
১. যদি (এখন) তোমরা তা করতে না পার, অবশ্য তোমরা কখনোই তা করতে পারবে না; তাহলে ঐ আগুনকে ভয় কর, যার লাকড়ি হবে মানুষ ও পাথর এবং যা কাফিরদের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে। (সূরা বাকারা-০২:২৪)
وَالَّذِیْنَ کَفَرُوْا وَکَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَاۤ اُولٰٓئِکَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ
২. আর যারা কুফরি করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, তারা জাহান্নামি। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। (সূরা-বাকারা: ০২ঃ৩৯)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قُوْۤا اَنْفُسَكُمْ وَ اَهْلِیْكُمْ نَارًا وَّ قُوْدُهَا النَّاسُ وَ الْحِجَارَۃُ عَلَیْهَا مَلٰٓئِکَۃٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا یَعْصُوْنَ اللهَ مَاۤ اَمَرَهُمْ وَ یَفْعَلُوْنَ مَا یُؤْمَرُوْنَ
৩. হে ঐসব লোক, যারা ঈমান এনেছ! নিজেদেরকে ও আপন পরিবার-পরিজনকে ঐ আগুন থেকে বাঁচাও, যার লাকড়ি হবে মানুষ ও পাথর। এবং যার উপর এমন সব ফেরেশতা নিয়োগ করা হবে, যারা খুবই কর্কশ ও কঠোর; যারা কখনো আল্লাহর নাফরমানি করে না এবং যে হুকুমই তাদেরকে দেয়া হয় তা তারা পালন করে। (সূরা তাহরিম ৬৬ : ৬)
وَسِیْقَ الَّذِیْنَ کَفَرُوْۤا اِلٰی جَهَنَّمَ زُمَرًا ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءُوْهَا فُتِحَتْ اَبْوَابُهَا وَ قَالَ لَهُمْ خَزَنَتُهَاۤ اَلَمْ یَاْتِكُمْ رُسُلٌ مِّنْكُمْ یَتْلُوْنَ عَلَیْكُمْ اٰیٰتِ رَبِّكُمْ وَ یُنْذِرُوْنَكُمْ لِقَآءَ یَوْمِكُمْ هٰذَا ؕ قَالُوْا بَلٰی وَلٰکِنْ حَقَّتْ کَلِمَۃُ الْعَذَابِ عَلَی الْکٰفِرِیْنَ
৪. (এ ফয়সালার পর) যারা কুফরি করেছিল তাদেরকে দলে দলে দোজখের দিকে হাঁকিয়ে নেয়া হবে। যখন তারা সেখানে পৌঁছবে তখন দোজখের দরজাগুলো খোলা হবে। দোজখের পাহারাদার তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্যে থেকে রাসূলগণ আসেননি, যারা তোমাদেরকে তোমাদের রবের আয়াতসমূহ শুনিয়েছেন এবং এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, একদিন তোমাদেরকে এ দিনটি দেখতে হবে? তারা জবাবে বলবে, হ্যাঁ, তারা এসেছিল। কিন্তু আজাবের ফয়সালা কাফিরদের উপর জারি হয়ে গেছে।’ (সূরা যুমার-৩৯ঃ৭১) বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা বাকারা-৩৯,৫৬, সূরা নিসা-১৪,২৬,১১৫, সূরা আনয়াম-২৭-৩১, সূরা আরাফ-৩৬-৪১,৫০-৫১, সূরা কাহ্ফ-২৯, সূরা ত্বহা-৭৪, সূরা আহযাব-৬৪-৬৬, সূরা ফাতের-৩৬, সূরা মোমেন-৭১-৭২, সূরা যোখরুখ-৭৪-৭৬, সূরা মোহাম্মদ-১৫, সূরা মুলক-৬-১১, সূরা নাবা -২১-২৬, সূরা গশিয়াহ-৭,
· হাদিস
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ نَبِىَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لاَ تَزَالُ جَهَنَّمُ تَقُوْلُ هَلْ مِنْ مَزِيْدٍ حَتّٰى يَضَعَ فِيْهَا رَبُّ الْعِزَّةِ تَبَارَكَ وَتَعَالٰى قَدَمَهٗ فَتَقُوْلُ قَطْ قَطْ وَعِزَّتِكَ وَ يُزْوَى بَعْضُهَا اِلٰى بَعْضٍ ـ (مُسْلِمٌ : بَابُ فِىْ شِدَّةِ حَرِّ نَارِ جَهَنَّمَ وَ بُعْرِهَا )
১. হযরত আনাস ইবনে মালেক ” থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাঃ বলেছেন, জান্নাম অনবরত বলতেই থাকবে আরো (অপরাধী) আছে কি ? এমনকি শেষ পর্যন্ত মহান আল্লাহ তায়ালা তার পা দ্বারা তাকে চেপে ধরবেন। অতঃপর জাহান্নাম বলবে, যথেষ্ট, যথেষ্ট। তোমার ইজ্জতের কসম! একাংশ অপরাংশকে নিবিষ্ট করে দিচ্ছে। (মুসলিম ৫০৮৪)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُفَّتِ النَّارُ بِالشَّهَوَاتِ وَ حُفَّتِ الْجَنَّةُ بِالْمَكَارِهِ ـ (اَحْمَدُ : مُسْنَدِ أَبِىْ هُرَيْرَةَ)
২. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, জাহান্নামকে লোভনীয় বস্তু দ্বারা আবৃত করে রাখা হয়েছে, আর জান্নাতকে আবৃত রাখা হয়েছে কষ্টকর কার্যদ্বারা। (আহমাদ: মুসনাদে আবি হুরাইরা, ৭২১৬)
আত্মশুদ্ধি
· আল-কুরআন
قَدْ اَفْلَحَ مَنْ تَزَکّٰی ড় وَ ذَکَرَ اسْمَ رَبِّهٖ فَصَلّٰی
১. সে-ই সফলকাম হয়েছে, যে পবিত্রতা লাভ করেছে ও আপন রবের নাম স্মরণ করেছে এবং তারপর নামাজ পড়েছে। (সূরা আ’লা-৮৭:১৪-১৫)
صِبْغَۃَ اللهِ ۚ وَمَنْ اَحْسَنُ مِنَ اللهِ صِبْغَۃً ۫ وَّنَحْنُ لَهٗ عٰبِدُوْنَ
২. আপনি বলুন, আল্লাহর রং ধারণ কর। তাঁর রং থেকে আর কার রং বেশি সুন্দর হতে পারে? আমরা তাঁরই দাসত্ব করে চলেছি। (সূরা বাকারা-০২ : ১৩৮) উপরিউক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন সূরা বাকারা- ১৫৩, সূরা আলে ইমরান-১০৩,১৬৪, সূরা আনফাল-২, সূরা তাওবা-১০৩, সূরা হাশর-১, সূরা জুমুয়াহ-২, সূরা মোযাম্মেল -৬-৮
· হাদিস
عَنْ أَبِىْ ذَرٍّ قَالَ قَالَ لِى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم اتَّقِ اللهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَ أَتْبِع السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَ خَالِقِ النَّاسَ بَخُلْقٍ حَسَنٍ ـ (تِرْمِذِىْ : بَابُ مَا جَاءَفِىْ مُعَاشَرَةِ النَّاسِ)
১. হযরত আবু যর গিফারী ” থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বলেছেন, তুমি যেখানেই থাক আল্লাহকে ভয় কর, আর মন্দ কাজ করলে তার পরপরই সৎ কাজ কর। তাহলে ভালো কাজ মন্দ কাজকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। আর মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার কর। (তিরমিযী: বাবু মা জা’আ ফি মুয়াশারাতি নাসি, ১৯১০)
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ حُسْنِ اِسْلَامِ الْمَرْهِ تَرْكُهٗ مَا لَا يَعْنِيْهِ ـ (تِرْمِذِىْ: بَابُ فِيْمَنْ تَكَلَّمَ بِكَلِمَةٍ يُضْحِكُ بِهَا النَاسَ )
২. হযরত আবু হুরায়রা ” থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, অশোভনীয় (অনর্থক) কাজ পরিহার করা মানুষের ইসলামের সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। (তিরমিযী : বাবু ফিমান তাকাল্লামা বিকালিমাতিন ইউদহিকু বিহান্নাসা, ২২৩৯)
দায়িত্বশীলের গুণাবলি
· আল-কুরআন
فَبِمَا رَحْمَۃٍ مِّنَ اللهِ لِنْتَ لَهُمْ ۚ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِیْظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِکَ ۪ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِی الْاَمْرِ ۚ فَاِذَا عَزَمْتَ فَتَوَکَّلْ عَلَی اللهِ ؕ اِنَّ اللهَ یُحِبُّ الْمُتَوَکِّلِیْنَ
১. এটা আল্লাহর অনুগ্রহ মাত্র যে আপনি (১) কোমল হৃদয়সম্পন্ন, যদি আপনি কঠোরভাষী ও তিক্ত মেজাজসম্পন্ন হতেন, তাহলে এরা আপনার চার পাশ থেকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যেতো। (২) কাজেই এদের ত্রুটিকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখুন (৩) এদের জন্য শাফায়াত (ক্ষমা) চান এবং (৪) বিভিন্ন বিষয়ে এদের সাথে পরামর্শ করুন। (৫) অতঃপর পরামর্শের পর যখন কোন বিষয়ে দৃঢ় সংকল্প হয়ে যান (৬) তখন আল্লাহর উপর ভরসা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ (তাঁর উপর) ভরসাকারীদের ভালবাসেন। (সূরা আলে ইমরান-৩:১৫৮)
مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ ؕ وَ الَّذِیْنَ مَعَهٗۤ اَشِدَّآءُ عَلَی الْكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَیْنَهُمْ تَرٰىهُمْ رُکَّعًا سُجَّدًا یَّبْتَغُوْنَ فَضْلًا مِّنَ اللهِ وَ رِضْوَانًا ۫
২. মুহাম্মাদ সাঃ আল্লাহর রাসূল এবং তার সাথে যারা আছে তারা কাফিরদের প্রতি বজ্র-কঠোর। আর নিজেরা নিজেদের প্রতি বড়ই করুণাশীল। (সূরা আল ফাতাহ-৪৮:২৯)
· হাদিস
عَنْ ابْنَ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْ لُ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهَ وَسَلَّمَ اَلَا كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِه فَالْاِ مَامُ الْاَعْظَمُ الَّذِىْ عَلَى النَّاسِ رَاعٍ وَهُوَ مَسْئُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِه ـ
১. সাবধান! তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। মুসলমানদের যিনি বড় নেতাও দায়িত্বশীল এবং তাঁকে তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهَ صَلَى اللهُ عَلَيْهَ وَسَلَّمِ اِنَّ اللهَ رَفَيْقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ فِى الْاَمْرِ كُلِّه ـ
২. হযরত আবু হুরায়রা ” হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ নরম আচরণকারী এবং যাবতীয় কার্যক্রমে তিনি নরম আচরণই পছন্দ করেন। (বুখারী ও মুসলিম)
ইসলামী আন্দোলন না করার পরিণাম সম্পর্কে
· আল-কুরআন
إِلَّا تَنفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْئًا ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
১. তোমরা যদি যুদ্ধযাত্রা না কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করবেন এবং তোমাদের পরিবর্তে অন্য কোন জাতি সৃষ্টি করে দেবেন আর তোমরা আল্লাহর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তির আধার। (সূরা তওবা, আয়াত-৯:৩৯)
إِلَّا تَنصُرُوهُ فَقَدْ نَصَرَهُ اللَّهُ إِذْ أَخْرَجَهُ الَّذِينَ كَفَرُوا
২. তোমরা যদি নবীর সাহায্য না কর তাহলে সেই জন্য কোনই পরোয়া নেই, আল্লাহ সেই সময়ও তাঁর সাহায্য করেছেন যখন কাফিরগণ তাকে বহিষ্কার করে দিয়েছিল। (সূরা তওবা, আয়াত-৯:৪০)
فَرِحَ الْمُخَلَّفُونَ بِمَقْعَدِهِمْ خِلَافَ رَسُولِ اللَّهِ وَكَرِهُوا أَن يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَقَالُوا لَا تَنفِرُوا فِي الْحَرِّ ۗ قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا ۚ لَّوْ كَانُوا يَفْقَهُونَ
৩. যাদেরকে পেছনে থেকে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল, তারা আল্লাহর রাসূলের সঙ্গে না যেয়ে ঘরে বসে থাকতে পেরে খুব খুশি হয়েছে এবং খোদার পথে জান ও মাল নিয়োগ করে জিহাদ করা তাদের সহ্য হল না। তারা লোকদের বলল যে, এই কঠিন গরমে বাইরে যেয়ো না তাদেরকে বল যে, জাহান্নামের আগুন তো উহা অপেক্ষা অধিক গরম। হায়, উহাদের যদি এটুকুও চেতনা না হতো! (সূরা তওবা, আয়াত-৯:৮১)
ব্যক্তিগত রিপোর্ট
· আল-কুরআন
اقْرَأْ كِتَابَكَ كَفَىٰ بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا ١
১. আপন কর্মের রেকর্ড পড়! আজ তোমার নিজের হিসাব দেয়ার জন্য তুমিই যথেষ্ট। (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত-১৭:১৪)
إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ ﴿١٧﴾ مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ ﴿١٨﴾
২. দু’জন লেখক তাদের ডানে বামে বসে সব কিছু রেকর্ড করে চলেছে। তাদের (মানুষ) মুখ থেকে এমন কথাই বের হয় না যা রেকর্ড করার জন্য একজন সজাগ সচেতন প্রহরী উপস্থিত না থাকবে। (সূরা আল-ক্বাফ, আয়াত-৫০:১৭-১৮)
وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافِظِينَ ﴿١٠﴾ كِرَامًا كَاتِبِينَ ﴿١١﴾ يَعْلَمُونَ مَا تَفْعَلُونَ ﴿١٢﴾
৩. তোমাদের উপর পরিদর্শক নিযুক্ত রয়েছে, তারা হলেন সম্মানিত লেখকবৃন্দ। যারা তোমাদের প্রত্যেকটি কাজ জানেন যা তোমরা কর। (সূরা ইনফিতার, আয়াত-৮২:১০-১২)
· হাদিস
وَ عَنْ شَدَّادِ بْنِ اَوْسٍ (رضـ) قَالَ رَسُوْلُ اللهِ (صـ) اَلْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَ عَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ وَالْعَاجِرُ مَنْ اَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهُ وَتَمَنَّى عَلٰى اللهِ ـ
১. হযরত সাদ্দাদ ইবনে আউস ” থেকে বর্ণিত, রাসূল সাঃ থেকে বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজের নাফসকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে সেই প্রকৃত বুদ্ধিমান, আর যে ব্যক্তি নিজেকে কুপ্রবৃত্তির গোলাম বানায় অথচ আল্লাহর নিকট প্রত্যাশা করে সে-ই অক্ষম। (তিরমিজি শরীফ)
আল-কুরআনের দশটি সূরা
· সূরা ফাতিহা
· بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ ﴿١﴾ الْحَمْدُ لِلَّـهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿٢﴾ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ ﴿٣﴾ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ ﴿٤﴾ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ﴿٥﴾ اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ ﴿٦﴾ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ ﴿٧﴾
অর্থ : সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্য, যিনি পরম করুণাময় ও মহান দয়ালু, যিনি বিচার দিনের মালিক, আমরা তোমারই এবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি, তুমি আমাদের সরল সহজ পথ দেখাও, তাদের পথ যাদের তুমি অনুগ্রহ দান করেছে, তাদের পথ নয়, (যারা) অভিশপ্ত এবং পথহারা হয়েছে।
সূরা ফিল
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِأَصْحَابِ الْفِيلِ ﴿١﴾ أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِي تَضْلِيلٍ ﴿٢﴾ وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ ﴿٣﴾ تَرْمِيهِم بِحِجَارَةٍ مِّن سِجِّيلٍ ﴿٤﴾ فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَّأْكُولٍ ﴿٥﴾
অর্থ : তুমি কি শোনো নি, তোমার প্রভু হস্তীওয়ালাদের সাথে কিরূপ আচরণ করেছিলেন? তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি? তিনি তাদের উপরে প্রেরণ করেছিলেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। যারা তাদের উপরে নিক্ষেপ করেছিল মেটেল পাথরের কঙ্কর। অতঃপর তিনি তাদের করে দেন ভক্ষিত তৃণসাদৃশ।
সূরা কুরাইশ
لِإِيلَافِ قُرَيْشٍ ﴿١﴾ إِيلَافِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ ﴿٢﴾ فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَـٰذَا الْبَيْتِ ﴿٣﴾ الَّذِي أَطْعَمَهُم مِّن جُوعٍ وَآمَنَهُم مِّنْ خَوْفٍ ﴿٤﴾
অর্থ : যেহেতু কুরাইশ অভ্যস্ত। শীত ও গ্রীষ্মের সফরে তারা অভ্যস্ত হওয়ায়। অতএব তারা যেন এ গৃহের রবের ইবাদাত করে। যিনি ক্ষুধায় তাদেরকে আহার দিয়েছেন আর ভয় থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন।
সূরা মাঊন
أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ ﴿١﴾ فَذَٰلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ ﴿٢﴾ وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ الْمِسْكِينِ ﴿٣﴾ فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ ﴿٤﴾ الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ ﴿٥﴾ الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ ﴿٦﴾ وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ ﴿٧﴾
অর্থ : তুমি কি তাকে দেখেছ, যে হিসাবÑপ্রতিদানকে অস্বীকার করে? সে-ই ইয়াতিমকে কঠোরভাবে তাড়িয়ে দেয়। আর মিসকিনকে খাদ্যদানে উৎসাহ দেয় না। অতএব সেই সালাত আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ যারা নিজেদের সালাতে অমনোযোগী। যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে এবং ছোট-খাটো গৃহসামগ্রী দানে নিষেধ করে।
সূরা কাউসার
إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ ﴿١﴾ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ ﴿٢﴾ إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ ﴿٣﴾
সূরা কাফিরূন
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ ﴿١﴾ لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ ﴿٢﴾ وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ ﴿٣﴾ وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ ﴿٤﴾ وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ ﴿٥﴾ لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ ﴿٦﴾
অর্থ : বল, হে কাফিররা। তোমরা যার ইবাদাত কর আমি তার ইবাদাত করি না এবং আমি যার ইবাদাত করি তোমরা তার ইবাদাতকারী নও। আর তোমরা যার ইবাদত করছ আমি তার ইবাদাতকারী হব না। আর আমি যার ইবাদাত করি তোমরা তার ইবাদাতকারী হবে না। তোমাদের জন্য তোমাদের দীন আর আমার জন্য আমার দীন।
সূরা নসর
إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّـهِ وَالْفَتْحُ ﴿١﴾ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّـهِ أَفْوَاجًا ﴿٢﴾ فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ ۚ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا ﴿٣﴾
অর্থ : যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে। আর তুমি লোকদেরকে দলে দলে আল্লাহর দীনে দাখিল হতে দেখবে। তখন তুমি তোমার রবের সপ্রশংস তাসবিহ পাঠ কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় তিনি তাওবা কবুলকারী।
ক্স সূরা লাহাব
تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ ﴿١﴾ مَا أَغْنَىٰ عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ ﴿٢﴾ سَيَصْلَىٰ نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ ﴿٣﴾ وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ ﴿٤﴾ فِي جِيدِهَا حَبْلٌ مِّن مَّسَدٍ ﴿٥﴾
অর্থ : ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দু’হাত এবং সে নিজেও ধ্বংস হোক। তার ধন-সম্পদ এবং যা সে অর্জন করেছে তা তার কাজে আসবে না। অচিরেই সে দগ্ধ হবে লেলিহান আগুনে। আর তার স্ত্রী লাকড়ি বহনকারী। তার গলায় পাকানো দড়ি।
সূরা ইখলাস
قُلْ هُوَ اللَّـهُ أَحَدٌ ﴿١﴾ اللَّـهُ الصَّمَدُ ﴿٢﴾ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ﴿٣﴾ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ﴿٤﴾
অর্থ : বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই।
সূরা ফালাক
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ﴿١﴾ مِن شَرِّ مَا خَلَقَ ﴿٢﴾ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ﴿٣﴾ وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ ﴿٤﴾ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ﴿٥﴾
অর্থ : বল, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে। আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয়। আর গিরায় ফুঁ-দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে। আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে’।
সূরা নাস
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ﴿١﴾ مَلِكِ النَّاسِ ﴿٢﴾ إِلَـٰهِ النَّاسِ ﴿٣﴾ مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ ﴿٤﴾ الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ ﴿٥﴾ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ ﴿٦﴾
অর্থ : বলুন আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের পালনকর্তার কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের মা’বুদের কাছে। তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্মগোপন করে। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে জিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।