ঈমানের দাবী
আব্বাস আলী খান
স্ক্যান কপি ডাউনলোড
বলে দিব কি মর্দে মু’মিনের চিহ্ন কি?
মরণ আসে যবে দুয়ারে তার,
মুচকি হাসি দেখা যায় ওষ্ঠে তার,
আর এটাই হলো পরিচয় ঈমানের।
কৈফিয়ত
আলহামদুলিল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য যিনি সুলেখক আব্বাস আলী খান রচিত ‘ঈমানেরদাবী’ গ্রন্থটি প্রকাশ করার তাওফিক দিয়েছেন। আব্বাস আলী খান ছিলেন একাধারে ইসলামী চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ এবং সুলেখক ও অনুবাদক। তাঁর লেখালেখি, পাণ্ডিত্য, ভাষা জ্ঞান সম্পর্কে ভালোভাবে পরিচিত হই ১৯৯৪ সালে। তখন প্রতি মাসে একবার সাংগঠনিক কাজে তার বাসায় যাওয়ার সুযোগ হতো। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে ছাত্র সংবাদের লেখা আনার জন্য বহুবার তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ হয়েছিল। তখন তিনি ‘মুসলমানদের অতীত ও বর্তমান’ শিরোনামে ছাত্র সংবাদে ধারাবাহিক লিখতেন।
কথা প্রসঙ্গে সাহস করে একদিন বললাম স্যার একটি প্রকাশনা সংস্থা করেছি আপনার লেখা একটি বই দিন। বললেন পরে দেখা করিও। কথা মতো কিছুদিন পর আবার দেখা করলাম। তখন তিনি ‘ঈমানের দাবী’ বইটি দিবেন বলে জানালেন। সে সাথে বললেন এ বইটি এক সময় প্রকাশিত হয়েছিল-এর সংস্করণ করে তোমাকে দিব। সে মতে তিনি সংস্কারে হাতও দিয়েছিলেন কিন্তু শত ব্যস্ততার কারণে সংস্করণ সম্পন্ন করতে পারেননি। ফলে সামান্য কিছু সংস্করণ সম্পন্ন করেই বইটি আমাকে দিয়ে দিলেন। বললেন, আল্লাহ তাওফিক দিলে পরে বইটির কলেবর বৃদ্ধি করা যাবে।
এবার বই প্রকাশের পালা। কম্পোজ, গ্রুফ ও প্রচ্ছদ সহ আনুসঙ্গিক কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে ফেললাম। কিন্তু হঠাৎ আমি দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হওয়ায় বইটি আর প্রকাশ করা হলোনা। ইতিমধ্যে আমি অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছি এমনি মুহুর্তে ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে খান সাহেব আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি উপস্থিত হয়ে বিলম্বের কারণ জানালাম এবং পাণ্ডুলিপি ফেরত দিতে চাইলাম। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি কিছুদিন সময় দিলে বইটি প্রকাশ করতে পারবে? না পারলে এটি আধুনিক প্রকাশনী বা মওদূদী রিসার্চ একাডেমী দিয়ে দিবো। বললাম, হ্যাঁ, কয়েক মাস সময় দিলে প্রকাশ করতে পারবো ইনশা আল্লাহ। তখন তিনি বললেন তোমাকে যখন বইটি দিয়েছি ফেরত নিবোনা। তুমি যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রকাশ করো। কারণ আমার শরীর স্বাস্থ্য ভালো যাচ্ছেনা বই প্রকাশ হয়েছে দেখে যেতে চাই। কিন্তু না আমার দুর্ভাগ্য বইটি যথাসময়ে এবারও প্রকাশ করতে পারলামনা। অবশেষে ১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর আব্বাস আলীখান এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী ত্যাগ করে মহান আল্লাহর ডাকে পাড়ি জমান মহাজীবনের পথে। যা হোক ব্যক্তিগত নানা সমস্য ও প্রতিকূলতা পেরিয়ে অবশেষে বইটি প্রকাশ করতে পেরে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। সেই সাথে অনিচ্ছাকৃত বিলম্বের জন্য দুঃখিত।
ঈমানের দাবী এ বইটিতে লেখক কুরআন ও হাদীসের আলোকে সুনিপুণভাবে ঈমানিয়াতের বিশ্লেষণ, ঈমানদারের পরিচয়, ঈমানের দাবী, মুমিনের গুণাবলী, ঈমান ও কুফরের পার্থক্য, ঈমানের অগ্নিপরীক্ষা, মুমিনদের জন্য সুসংবাদ সহ ঈমানের প্রভৃতি বিষয় অত্যন্ত সাবলীল ভাবে আলোচনা করেছেন। নিঃসন্দেহে এটি ঈমান বিষয়ক একটি মৌলিক গ্রন্থ। আশা করি বইটি পাঠে একজন মানুষ সত্যিকার ঈমানদার হওয়ার নির্দেশনা পাবেন এবং ঈমানের দাবী সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাবেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে ঈমানের দাবী অনুযায়ী সামগ্রিক জীবন পরিচালনার তাওফিক দিন। আমীন।
প্রকাশক
মুহাম্মদ লোকমান হোসাইন